জনবহুল এলাকার ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে পদক্ষেপ পূর্ত দফতরের

রাজ্যের বিভিন্ন জনবহুল এলাকার ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে পদক্ষেপ নিতে চলেছে পূর্ত দফতর। রাজ্যের কোন কোন জায়গায় ফুটপাথ বেদখল হয়ে রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জোগাড়ের জন্যে আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন পূর্তসচিব অন্তরা আচার্য। বিশেষ করে যে সব এলাকায় স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মার্কেট রয়েছে, তার আশপাশের রাস্তায় পর্যাপ্ত ফুটপাথ রয়েছে কিনা এবং মানুষজন ঠিকমতো চলাচল করতে পারছেন কিনা তা বিশদে জানাতে বলা হয়েছে এই রিপোর্টে। সঙ্গে এও বলা হয়েছে, রাস্তা পারাপারের সুবিধা আছে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। সেই মতো ডিটেলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) বানাতে হবে। ফুটপাথ পথচারীদের চলাচলের উপযোগী করে তুলতে কোথায় বেআইনি কাঠামো সরাতে হবে সেটাও ডিপিআরে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ফুটপাথ দখলমুক্ত করার অভিযানে নামবে প্রশাসন।

নবান্ন সূত্রের খবর, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত রোড সেফটি কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বহু জায়গায় পর্যাপ্ত ফুটপাথ না থাকায় পথচারীরা সমস্যায় পড়ছেন। এ বিষয়ে রাজ্যকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে ফুটপাথের সমস্যা মেটাতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। পূর্ত দপ্তর নির্দেশিকা জারি করেছে। পূর্তসচিবের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এলাকা ধরে ফুটপাথের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ মাপতে হবে।

ফুটপাথ যতটা চওড়া থাকার কথা, তা আছে কিনা, ফুটপাথে কোনও বেআইনি কাঠামো থাকলে, তা সরাতে হবে কিনা, সে-সব রিপোর্টে জানাতে হবে। সেই মতো অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা পড়বে সুপ্রিম কোর্টে। তবে ফুটপাথ শেষ পর্যন্ত দখলমুক্ত করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে প্রশাসনের একাংশই। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, দেশের বর্তমান আইনে কোনও হকারকে জবরদস্তি উচ্ছেদ করা যায় না। বৈধ এবং অবৈধ হকার, ঠিক করে টাউন ভেন্ডিং কমিটি। কমিটি সম্মতি না নিলে প্রশাসনের পক্ষে হকার উচ্ছেদ সম্ভব নয়।
প্রশাসন আগ বাড়িয়ে ব্যবস্থা নিতে গেলে হকাররা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসতে পারেন। হকার ছাড়াও ফুটপাথে বহু পার্টি অফিস, মন্দির, মাজার রয়েছে। সে সব কাঠামো ভাঙতে গেলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে।

এই প্রসঙ্গে হকার সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ বলেন, ‘২০১৪-র হকার আইনের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আর বেআইনি দখলদার বলা যায় না। ফুটপাথে বসে ব্যবসা করা হকারদের আইনি অধিকার। যদি কেউ ফুটপাথের এক তৃতীয়াংশের বাইরে বসে ব্যবসা করেন, সেক্ষেত্রে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে আমরা আপত্তি করব না। কিন্তু ফুটপাথ দখলমুক্ত করার নামে জবরদস্তি হকার উচ্ছেদের চেষ্টা হলে আমরা প্রতিরোধ করব। আইনের রাস্তাও খোলা আছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × two =