কলকাতায় চলল গুলি, আহত ১

খাস কলকাতায় পার্ক স্ট্রিট ও মির্জা গালিব স্ট্রিটের সংলগ্ন এলাকায় চলল গুলি। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন একজন। পুলিশ সূত্রে খবর, আহত ব্যক্তি এসএসকএম হাসপাতালে ভর্তি। এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত ব্যক্তি। পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার বিকেলে। বছর ২৯-এর একলাস বেগ ও সোনা নামে স্থানীয় দুই যুবক বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন। এলাকাবাসীর দাবি, সোনার বাইকে ওভারটেক করে একলাসের বাইক। কেন বাইক ওভারটেক করল তা নিয়ে দুই পক্ষের প্রথমে বচসা হয়। বিকেল সাড়ে চারটের ঘটনার রেশ গড়ায় রাত্রি ১২টা নাগাদ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল এসে একলাসের ওপর চড়াও হয়। এরপরই একলাসকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। একলাসের ডান পায়ে গুলি লাগে। গুলি চালানোর পরই অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ একলাসকে  উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এই ঘটনায় স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘রাত্রিবেলা ৭০ থেকে ৮০ জন এসেছে হঠাৎ করে। আসার পরে কী ঝামেলা হল বুঝলাম না। গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেল। এরপর পুলিশ এল। তদন্ত শুরু করেছে।’ গুলি চালানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পার্কস্ট্রিট থানার পুলিশ। তবে মুল অভিযুক্ত সোনা ও তাঁর সহযোগীরা পলাতক। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সোনার নাম আগেই পুলিশের খাতায় ছিল। এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে সে জড়িত।

এদিকে পার্ক স্ট্রিট ও মির্জাগালিব স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকায় এই গুলি চালনার ঘটনায় সমাজ বিরোধীদের হাতে হাতে কীভাবে পৌঁছে যাচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বস্তরেই। এই প্রসঙ্গে কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম এসবের জন্য অবশ্য পুলিশি ব্যর্থতা মানতে রাজি নন। তাঁর যুক্তি, এত বিশাল জনসংখ্যার মাঝেই পুলিশের নজর এড়িয়ে ঢুকে রাজ্যে ঢুকে পড়ছে অস্ত্র।

শুক্রবারের ঘটনায় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে বার বার করে বলেছেন সব আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার জন্য। কিন্তু ব্যাপারটা হল পশ্চিমবঙ্গের চারদিকে বর্ডার রয়েছে। বিহারের মুঙ্গের, অসম, ঝাড়খণ্ড থেকে (আগ্নেয়াস্ত্র) আসছে। বর্ডারগুলিকে সিল করে সার্চ অপারেশনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।’ অর্থাৎ, ভিন রাজ্য থেকেই যে পুলিশের নজর এড়িয়ে বাংলায় আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে, সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি ভিনরাজ্যের সীমানাগুলিতে আরও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন, সেটাও মনে করছেন তিনি।

শুধু পার্কস্ট্রিট থানা এলাকাতেই নয়, শনিবার বেলঘরিয়াতেও এক ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। মালদাতেও গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে এক ব্যবসায়ীকে গুলির অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক গুলি চালানোর অভিযোগ যখন উঠে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, তখন ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × one =