সবজি অগ্নিমূল্য, দেখা নেই টাস্ক ফোর্সের

বাজারে সবজি কিনতে গিয়ে হাতে ছ্যাঁকা লাগছে মধ্যবিত্তের। এককথায়, শাকসবজির যা দাম তাতে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়েছে আমজনতার। কারণ, সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে বেগুন, টমেটো থেকে কাঁচা লঙ্কা, শসা। এই ছবিটা দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ সর্বত্র একই।

এদিকে কলকাতার একাধিক বাজারে কাঁচা লঙ্কা দেড়শো টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ১০০ টাকা কেজি। পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৩১ টাকা কেজি জ্যোতি আলু। চন্দ্রমুখি আলু ৩৬ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা দরে। ব্যাপক দাম বেগুনেরও। প্রতি কেজি বেগুনের দাম রয়েছে ৭০-৯০ টাকা। এছাড়াও, টমেটোর গায়ে হাত ছোঁয়াতে পারছে না মধ্যবিত্ত।

এই ছবির কোনও হেরফের নেই শিলিগুড়িতেও। সকাল থেকেই বাজারে গিয়ে মাথায় হাত ক্রেতাদের। এক ক্রেতা তো স্পষ্টই জানিয়েছেন, ‘দাম তো প্রচুর সব কিছুরই। কিন্তু আর করা যাবে। খেতে তো হবে।’

তবে সবজি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জোগান কম থাকাতেই এই অবস্থা। অনেকেই বলছেন, বিগত কিছুদিনে প্রবল গরমে ক্ষতি হয়েছে শাক-সবজির। পাশাপাশি গরমের পর আচমকা বৃষ্টিতেও ফসলে ধরেছে পচন। আলু, পেঁয়াজের আমদানি কমে গিয়েছে। যদিও ক্রেতারা বলছেন, যা পরিস্থিতি তাতে সরকারের নজরদারির বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে টাস্ক ফোর্সের ভূমিকা নিয়েও। তাঁদের কেন দেখা মিলছে না সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।

এদিকে বাজারে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হলেও চাষিরা কিন্তু ক্ষতির মুখেই পড়ে রয়েছেন। তথ্য বলছে, এ বছর গোটা রাজ্যেই আলুর ফলন অনেক কম হয়েছে। অন্য বছর বিঘা পিছু গড়ে ৫০ কেজির ১০০ বস্তা আলু হয়ে থাকে। এবার তা বিঘা পিছু কমে দাঁড়িয়েছে ৭০ বস্তায়। তাতেই চাপে পড়েছেন কৃষকরা। লাভ তো দূর চাষের খরচও ঘরে তুলতে না পেরে মাথায় পড়েছে হাত।

শুধু সবজি কেন একই হাল মাছ বাজারেও। এদিন সকাল থেকেই মাছের বাজারে ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মতো। বাজারে মিলছে রুই, কাতলা, ভেটকি, পাবদা, বাটা, কই, চিংড়ির মতো মাছ। সঙ্গে উপরি পাওনা মাছের রাজা ইলিশ। বাজারে রুইয়ের প্রতি কেজিতে দাম ছিল ২০০-২২০ টাকা, কাতলার কেজি প্রতি রেট ৩৫০-৪০০ টাকা, পাবদা বিকিয়েছে কেজি প্রতি ৪৫০-৫০০ টাকা দরে। এছাড়াও ভেটকি কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৫০০-৬০০ টাকা দরে। এদিন বাজারে ট্যাংরা মাছের প্রতি কেজিতে দাম ছিল ৪০০-৫০০  টাকা।

অন্যদিকে, মরশুমের প্রথম ইলিশের গায়ে হাত ছোঁয়াতে পারছে না আমজনতা। ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশের প্রতি কেজিতে দাম ছিল ৭০০ টাকার আশেপাশে। ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দাম ১০০-১২০০ টাকা। অন্যদিকে এক কেজি ও তার বেশি ওজনের ইলিশের কেজি প্রতি দাম শুরু হচ্ছে ১৫০০- ১৬০০ টাকা। আবার চিংড়ির দামও খুব সস্তা নয়। ছোট আকারের চিংড়ির দাম ৩০০ টাকা কেজি। বাগদা বিকিয়েছে কেজি প্রতি ৫০০ টাকা ও গলদা চিংড়ির কেজি ছিল ৭০০-৮০০টাকা।

সব মিলিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে বাঙালি মধ্যবিত্তের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 2 =