মুকুল রায়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, কিন্তু সংকটজনক, এমনটাই জানালেন পুত্র শুভ্রাংশ। এখনও তিনি রয়েছেন আইসিইউতে। তাঁর সুস্থ হতে সময় লাগবে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে কাঁচপাড়ায় নিজের বাড়িতে আচমকাই পড়ে যান মুকুল রায়। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। সেই রাতেই তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে তাঁর। আপাতত আইসিইউ-তে রয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে শুভ্রাংশু এও জানান, ‘চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বাবার সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগবে। তিনি নিয়মিত অবজার্ভেশনের মধ্যে রয়েছেন।’ উল্লেখ্য, মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এরপর শুভ্রাংশুর ডাকেও সাড়া দেননি মুকুল রায় বলে আক্ষেপ প্রকাশ করতেও দেখা যায় কুণালকে। সঙ্গে শুভ্রাংশু এও বলেন, ‘বাবা এখনও ঠিকমতো সকলকে চিনতে পারছেন না। কথাও বলতে পারছেন না ঠিক করে।’ উল্লেখ্য, স্ত্রীর মৃত্যুর পরেই মুকুল রায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তার প্রভাব পড়ে শরীরের উপরেও। বেশ কয়েকবার জনসমক্ষে তাঁকে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শোনা গিয়েছিল। তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল, বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, মুকুল রায় ২০১৮ সালে যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির সমর কৌশল অনেকটাই তাঁর সাজানো ছিল বলে পর্যবেক্ষণ রাজনৈতিক মহলের। এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। সেই বছরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর স্ত্রী। সেই সময় তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই সৌজন্যের নজির আজও মনে রেখেছে বাংলা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন মুকুল রায়। এরপর তাঁকে সেভাবে আর রাজনীতির ময়দানে সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি। মাঝে অবশ্য তিনি একবার দিল্লি গিয়েছিলেন। সেই সময় বিস্তর শোরগোল পড়েছিল। শুভ্রাংশু দাবি করেছিলেন, তাঁর বাবা শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ নন। জোর করে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময় পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে মুকুল রায়কে সেভাবে সক্রিয় রাজনীতিকের ভূমিকায় দেখা যায়নি।