ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলের জন্য মিলছিল না রক্ত। আর ছেলের জন্য রক্তের যোগান দিতে গিয়ে আড়াই হাজার টাকা খোয়াতে হয়েছে বলে দাবি রোগীর বাবার। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা সনাতন কারকের। ঘটনাটি খাস কলকাতার। ছেলে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন। রোজই তাঁকে রক্ত দিতে হচ্ছে। ছেলের চিকিৎসা চলাকালীন হাসপাতালের এক ব্যক্তি সঙ্গে পরিচয় হয় রোগীর বাবার। ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, রক্তের প্রয়োজন হলে সাহায্য করতে পারবেন। শুক্রবার হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত না পেয়ে ওই ব্যক্তিকে ফোন করেন রোগীর বাবা। এরপরই হাসপাতালের গেটের বাইরে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে রোগীর বাবাকে দেখা করতে বলেন ওই ব্যক্তি। এদিকে ছেলেকে বাঁচানোর জন্য সেই টাকা ওই ব্যক্তিকে দিয়ে দেন সনাতনবাবু। অভিযোগ, টাকা দেওয়ার পর রোগীর পরিবারকে রক্ত দেওয়া তো দূরে থাক, এরপর আর ফোন তোলা তো দূর-অস্ত, বারবার তাঁর ফোন সুইচড অফ শোনা যেতে থাকে।
সূত্রে খবর, সনাতন কাররের সাত বছরের সন্তান শিবম গত তিন বছর ধরে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। ৫ তারিখ তাকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসার জন্য মাঝে মধ্যেই রক্তের প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে রক্তের আয়োজন করে দেওয়া হলেও ১২ জুলাই কোনওভাবেই রক্ত জোগাড় করতে না পেরে তিনি ওই ব্যক্তিকে ফোন করেছিলেন বলে জানান সনাতন। ওই ব্যক্তি নিজেকে রিপন মণ্ডল হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং নদিয়ার বাসিন্দা বলে দাবি করেছিলেন, জানা গিয়েছে এমনটাই।
এদিকে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে রোগীর পরিবার মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। রোগীর পরিবারের কথায়, ‘এই ধরনের চক্রগুলিকে সমূলে উৎখাত করার জন্য আবেদন জানাব।’ এর আগেও এই রকম দালাল চক্র বারবার সামনে এসেছে। অতীতে এই ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনেককে গ্রেফতার করাও হয়েছে। তাও কেন এই ধরনের দালালরাজ বন্ধ হচ্ছে না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দিরা দে জানান, এই বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। এই বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার পরেই কোনও মন্তব্য করতে পারবেন তিনি। এদিকে সনাতন কারকের থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।