কড়েয়ার প্রোমোটার খুনের ঘটনায় ভিন রাজ্যে পালিয়েছে খুনিরা, অনুমান পুলিশের

কড়েয়ায় খুনের পর হাওড়া স্টেশন হয়েই ভিন রাজ্যে পালিয়েছে দুই খুনি, এমনটাই জানানো হল লালবাজারের তরফ থেকে। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, হাওড়া স্টেশনের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই খুনিকে চিহ্নিতও করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, সঙ্গে থাকা বাইক ও স্কুটি হাওড়া স্টেশনের বাইরে কোথাও রেখে তারা ট্রেন ধরে পালিয়েছে ভিনরাজ্যে। যদিও স্কুটি ও বাইক করেই তারা ভিনরাজ্যে পালিয়েছে কি না সেই ব‌্যাপারে নিশ্চিত হতে রাজ্যের একাধিক টোল প্লাজার সিসিটিভি ফুটেজও পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে। এরই পাশাপাশি পুলিশের টিম তল্লাশি চালাচ্ছে ভিনরাজ্যেও।

গত শুক্রবার ভোররাতে কড়েয়ার শামসুল হুদা রোডে নিজের অফিসঘরের ভিতর খুন হন প্রোমোটার সামশের আলি। প্রোমোটারের বাইক ও স্কুটি নিয়ে পালায় তাঁরই ছায়াসঙ্গী তথা ‘বডিগার্ড’ রাহুল ও এক সঙ্গী। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, খুনিদের বাইক ও স্কুটি নিয়ে পালানোর দৃশ‌্য উঠেছে আশপাশের দু’টি সিসিটিভি ক‌্যামেরার ফুটেজেও। কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ হাওড়ায় পৌঁছয়। হাওড়া স্টেশনের বাইরের সিসিটিভিতেও তাদের দেখা গিয়েছে বাইক ও স্কুটি করে যেতে। যদিও তারপর তারা সড়কপথেই পালিয়েছে কি না, তা নিয়ে পুলিশ ধন্দে। তবে পুলিশের ধারণা, শেষ পর্যন্ত হাওড়া থেকে ট্রেনে করেই পালিয়েছে তারা। তাই হাওড়া স্টেশনের ভিতর সিসিটিভির ফুটেজও পুলিশ পরীক্ষা করছে। রাহুলের বাড়ি অসমে হলেও সে বিহার বা অন‌্য রাজ্যে সঙ্গীকে নিয়ে পালিয়েছে, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে। এদিকে, রাহুল নামে ওই খুনের মূল অভিযুক্ত সামশেরের কর্মচারি হলেও গত এক বছর ধরে বিভিন্ন কারণে দুজনের মধ্যে গোলমাল হয়েছে বলেই জানতে পেরেছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।

পুলিশ তদন্তে নেমে এও জানতে পেরেছে, বছর দুয়েক আগে রাজারহাট ও নিউটাউনে বিভিন্ন কাজ করত রাহুল। ওই সময়ে সামশের অস্ত্র পাচারের অভিযোগে ধরাও পড়েছিল সে। এদিকে রাজারহাটে যাতায়াতের সূত্র ধরেই রাহুল সামশেরের নজরে আসে। তিনি তাকে কাজে নিয়োগ করেন। কিন্তু এক বছর আগে টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করে সামশেরের সঙ্গে রাহুলের গোলমাল হয়। তখন তাকে এলাকার বাসিন্দারাই তাড়িয়ে দিতে বলেন। যদিও রাহুল ক্ষমা চাইলে সামশের তাকে রেখে দেন। খুনের এক সপ্তাহ আগে ফের দুজনের মধ্যে গোলমাল হয়। তখন রাহুলকে মারধর করে সামশের। পুলিশের মতে, সেই শোধ তুলতে সামশেরের মাথায় চপার দিয়ে এতটাই জোরে খুনি আঘাত করে যে, তাঁর মাথা থেকে ঘিলুর প্রায় পুরো অংশই ছিটকে গিয়ে পড়ে বালিশ ও বিছানায়। দেওয়ালে পর্যন্ত চপারের দাগ পড়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 2 =