ভুল সংশোধনের বার্তা তৃণমূল সাংসদ সৌগতর

আড়িয়াদহে জয়ন্ত সিংকাণ্ডের পর ‘ভুল সংশোধন’-এর বার্তা তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায়ের। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানিয়ে দেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সৌগত রায়ের পাশে দেখা যায় মদন মিত্রকেও। মঙ্গলবার এক দলীয় বৈঠকের পর সৌগত রায় বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা কোনও জায়গায় কোনও বিবৃতি দেবেন না। কেউ আলাদাভাবে কোনও বিবৃতি দেবেন না। নীতিগতভাবে দলের লোকের দলেরই কারও বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের সামনে যাওয়া উচিত নয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে কোথাও কোনও বড় প্রোমোটার বা সমাজবিরোধীদের সম্পর্ক থাকবে না। অতীতে যদি কোথাও ভুল হয়ে থাকে, আমরা সেটা সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সৌগত রায় বলেন, ‘অতীতে কিছু ভুল আমাদের হয়েছে। কার ভুল সেটা আলোচনা করে লাভ নেই। এরপর আর হবে না। ভুল হলে যে করবে তার দায়।’ শুধু তাই নয়, যদি আগামীদিনে দলের কেউ প্রোমোটার বা সমাজবিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, তাহলে তাকে শোকজ বা বহিষ্কার করা হতে পারে। তবে এদিনের বৈঠকে যে শুধু কামারহাটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তাও জানিয়ে দেন সৌগত রায়।

একইসঙ্গে জয়ন্ত সিংয়ের বাড়ি ভাঙা হবে কি না, সংবাদমাধ্যমের সেই প্রশ্নের উত্তরে সৌগত রায় বলেন, ‘বাড়ি ভাঙার আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটা শুরু হয়েছে। কী ভাবে একটা বাড়ি ভাঙা যায় তার একটা আইন রয়েছে। পুরসভা প্রথম পদক্ষেপগুলি নিয়েছে।’

সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল একটি নারকীয় অত্যাচারের ভিডিও। যার সূত্র ধরে উঠে এসেছে আড়িয়াদহের ত্রাস জয়ন্ত সিংয়ের নাম। তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এর পর সোশাল মিডিয়ায় একের পর এক ভাইরাল হয়েছে জয়ন্ত বাহিনীর অত্যাচারের কাহিনী। মারধর, তোলাবাজি শুধু নয়, সরকারি জমিতে প্রাসাদোপম বাড়ি, পার্টি অফিস দখল করে ক্লাব, কী অভিযোগ নেই জয়ন্ত বিরুদ্ধে। এদিকে এসবের মাঝে প্রকাশ্যে এসেছে মদন মিত্র ও সৌগত রায়ের সঙ্গে তাঁর একাধিক ছবি। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয় বিভিন্নমহলে। একাধিকবার সৌগত রায় ও মদন মিত্র দাবি করেন, তাঁরা জয়ন্তকে চিনলেও ঘনিষ্ঠতা ছিল না। এরই পাশাপাশি জয়ন্ত সিংয়ের বাড়বাড়ন্তের কথা আগে থেকেই তাঁদের গোচরে ছিল বলেও এদিন স্বীকার করে নেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘এর আগেও তো জয়ন্ত সিং গ্রেফতার হয়েছিল। ওকে উত্তরবঙ্গে থেকে ধরে এনেছিল পুলিশ। দেড় মাস হেফাজতে ছিল। যাকে মেরেছিল, সে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই ও জামিন পেয়ে যায়। পুলিশ যথেষ্ট কড়া ধারা ওর বিরুদ্ধে দেয়নি, তাই ও ছাড়া পেয়েছে। পুলিশকে বলেছি সবচেয়ে কঠিন ধারা ওর বিরুদ্ধে দেওয়া উচিত।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আড়িয়াদহে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছে ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং। গোটা ঘটনাকে ঘিরে শাসক-বিরোধী ব্যাপক তর্জাও শুরু হয়। এরই মাঝে এদিন বৈঠকে বসে তৃণমূল। আর সেখানেই এহেন সিদ্ধান্ত নেন সৌগত রায়, মদন মিত্ররা। তবে সোমবার জয়ন্ত কাণ্ডে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সৌগত রায় ও মদন মিত্র গোটা ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা যে তাঁরা করেন তা বলাই বাহুল্য।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + 11 =