রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও মানহানিকর বা অসত্য মন্তব্য করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপালের মানহানির মামলায় এমনই নির্দেশ এল কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত এই নির্দেশ মেনে চলার কথা জানান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাও।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিছুদিন আগে নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, তিনি মহিলাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছেন যে তাঁরা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এরপরই রাজ্যপাল কলকাতা হাইকোর্টে মানহানির মামলা করেন। সেই মামলায় তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রায়াত হোসেন এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকে যোগ করা হয়। সংবাদ মাধ্যমকেও মামলায় যোগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি কৃষ্ণা রাও। মামলার শুনানির সময় রাজ্যপালের আইনজীবী আবেদন জানান, মামলা চলাকালীন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিক হাইকোর্ট। সোমবার মামলার শুনানি শেষ হয়। তবে অন্তর্বর্তী নির্দেশ স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি। এদিন বিচারপতি অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানালেন, ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মানহানিকর কিংবা অসত্য বিবৃতি দেওয়া যাবে না।
নির্দেশে বিচারপতি জানান, যদি অন্তর্বর্তী নির্দেশ না দেওয়া হয়, তাহলে মামলাকারীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করতে ফ্রি হ্যান্ড দেওয়া হবে। এর ফলে মামলাকারীর মর্যাদাহানি ঘটবে। সেকথা মাথায় রেখেই আগামী ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত মামলাকারীর বিরুদ্ধে কোনওরকম মানহানিকর মন্তব্য করা যাবে না বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি। সঙ্গে এও নির্দেশ দেওয়া হয়, কোনওরকম লিখিত বা সোশ্যাল মিডিয়াতেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করা যাবে না। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ অগাস্ট হবে বলে জানান বিচারপতি।
হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর রাজভবনের তরফে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। একটি ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল বলেন, সত্যের জয় হবে। তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করে যাবেন। হাইকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
হাইকোর্টের এই নির্দেশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানান, ‘রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা চলছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মন্তব্যগুলি মানহানিকর কিংবা অসত্য কি না, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসেনি হাইকোর্ট। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মহিলারা তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন। রাজ্যের মহিলাদের সুরক্ষার দায় রয়েছে তাঁর। তিনি চোখ বন্ধ করে থাকতে পারেন না। তাঁর মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য মানহানিকর নয়।’ তবে হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হবে বলে জানান আইনজীবী সঞ্জয় বসু।