উত্তর কলকাতার বিজেপির যুবমোর্চার নেতা সূরয সিংহের কীর্তি প্রকাশ্যে আনলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। নিজের এক্স হ্যান্ডলে একাধিক পোস্টে বিভিন্ন ছবি দিয়ে বুধবার কুণালকে লিখতে দেখা যায়, ‘উত্তর কলকাতা বিজেপি যুব মোর্চা সভাপতি সূরয সিংহ। মাতাল হয়ে গড়াগড়ি। ওর লোকেরাই দিল। ছবি, ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করিনি।’ এই সব ছবির কোনওটায় দেখা যাচ্ছে সূরয ‘ভারসাম্যহীন’ হয়ে ফটপাথে বসে রয়েছেন। কোনওটায় ফুটপাথে চিতপাত হয়ে শুয়ে রয়েছেন।
শুধু তাই নয়, সূরযের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কলকাতার বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের ছবি রয়েছে। সেগুলিও প্রকাশ্যে এনেছেন কুণালই। সঙ্গে কুণাল এও লেখেন, ‘অনেকের সঙ্গে ছবি দেখছি। ছবি থাকলেই অপকর্মের দায় নেবেন তো? বিজেপি কিছু বলবে?’ আড়িয়াদহের তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত সিংহ ওরফে ‘জায়ান্ট’-এর সঙ্গে মদন মিত্র, সৌগত রায়দের ছবি নিয়ে ময়দানে নেমেছিল বিজেপি।
তবে জয়ন্ত তৃণমূলের কোনও ‘পদাধিকারী’ ছিলেন না। কিন্তু সূরয বিজেপির একটি সাংগঠনিক জেলার যুব সভাপতি। ফলে বিজেপির কাছে বিষয়টি নিঃসন্দেহে বিড়ম্বনার। আবার অন্য একাংশের বক্তব্য, আড়িয়াদহে জয়ন্ত-বাহিনী যা যা ঘটিয়েছে তার যে অভিঘাত তার সঙ্গে বিজেপি যুবনেতার ঘটনার অনেক ফারাক রয়েছে। আড়িয়াদহের ঘটনা ঘৃণ্য এবং নিকৃষ্টতম অপরাধ। আর সূরযের ঘটনা স্খলন। দু’টি ঘটনার মধ্যে মৌলিক ফারাক রয়েছে। তবে বিজেপি যে ‘সূরযকাণ্ডে’ অস্বস্তিতে তা স্পষ্ট। কুণালের এই পোস্টের পরই এ প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠেছে যে, আড়িয়াদহের জয়ন্ত সিংহের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের একাংশের ছবি প্রকাশ্যে আসায় যে শোরগোল পড়েছিল, কুণাল তারই পাল্টা দিলেন কি না তা নিয়ে।
তবে এই প্রসঙ্গে কলকাতার বিজেপি কাউন্সিলর সজল স্পষ্টই বলেন, ‘ছবি দিয়ে অনেক কিছুই বোঝা যায়।’ সূরযের এই ছবি এবং ঘটনায় যে বিজেপির ভাবমূর্তিতে ধাক্কা লেগেছে, তা-ও মেনে নিয়েছেন সজল। সঙ্গে এও বলেন, ‘সূরযকে কেউ মদ খাইয়ে দিয়েছে, না তিনি নিজে খেয়েছেন তা বিচার্য নয়। তাঁর এই ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। দল আজকালের মধ্যেই সবটা বিচার-বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নিয়ে নেবে।’ তবে পাশাপাশিই সজল কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘মনে রাখবেন, এই মাতালদের জন্যই বাংলার অর্থনীতি টিকে রয়েছে।’