ভারতীয় ন্যায় সংহিতা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারের তরফে আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজ্যে তিন নতুন আইন লাগু করার ক্ষেত্রে কোনওরকম ফাঁক ফোঁকর না থেকে যায়, তার জন্য বুধবারই সাত জনের কমিটি তৈরি করে দিয়েছে নবান্ন। কমিটিতে থাকছেন অসীম রায়, মলয় ঘটক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অ্যাডভোকেট জেনারেল সঞ্জয় বসু, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তাঁর এই তিন নতুন আইন নিয়ে পর্যালোচনা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন যে এই আইন নিয়ে বাদল অধিবেশনে সরব হবে তাঁর দল। তার আগেই আইন খতিয়ে দেখতে এই কমিটি গঠন করা হল। নবান্নের তৈরি করা সেই কমিটি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এই কমিটি কেন গঠন করা হয়েছে, কী ভূমিকা – রাজভবনের তরফে সে সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়। রাজভবনে অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে বিবৃতিটি পোস্ট করা হয়েছে। ওই বিবৃতি অনুযায়ী, তিন ফৌজদারি আইন খতিয়ে দেখতে কেন কমিটি গঠন করা হল, কী ভূমিকা ওই কমিটির সে সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে তলব করা হয়েছে। কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজ্য সরকার সময়মতো জবাব দিয়েছিল কিনা, তা-ও রাজভবনের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে। রাজ্যপালের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘রাজ্যের মধ্যে আলাদা রাজ্য হয়ে উঠতে পারে না বাংলা। ‘বানানা রিপাবলিক’ও হয়ে উঠতে পারে না।’
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, ব্রিটিশ জমানার ভারতীয় দণ্ডবিধি-সহ তিন আইন অতীত হয়ে যায় গত ১ জুলাই। কারণ, ওইদিন থেকে দেশজুড়ে কার্যকর হয় নয়া তিন আইন – ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম। ভারতীয় দণ্ডবিধি (IPC) বদলে হয় ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। শুরু থেকেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে রাজ্য সরকার। নয়া ফৌজদারি আইনের বিরোধিতা করে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর মূল বক্তব্য, এই আইন প্রণয়ণে বড্ড তাড়াহুড়ো করা হয়েছে, সব পক্ষের মতামত নেওয়া হয়নি। এবং কেন্দ্র যে ফৌজদারি আইনগুলি আনছে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। পাশাপাশি লোকসভায় পাস হওয়া তিন ফৌজদারি আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক, এই আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে বিলগুলি পাশ করানো হয়েছে, তা গণতন্ত্রের ‘কালো অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করেন মমতা।