রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রেক্ষিতে রাজ্যের আবেদন ছিল, অন্তত তদন্ত শুরু করতে দেওয়া হোক, এবার অভিযোগকারিনীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারকে নোটিস ইস্যু করল সুপ্রিম কোর্ট। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার তদন্ত অন্তত শুরু করতে দেওয়া হোক, শীর্ষ আদালতে এই আর্জি জানানো হয়েছিল রাজ্যের তরফ থেকে। এবার সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপে এটা স্পষ্ট যে রাজ্যের এই আবেদনে মান্যতা দিল সর্বোচ্চ আদালত। শুক্রবার এ বিষয়ে শুনানি শুরু করার অনুমতি দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচের জেরে ফৌজদারি ধারায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয় বলে এই অনুচ্ছেদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দরজায় কড়া নাড়েন রাজভবনের ওই মহিলা কর্মী। শুক্রবার মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পাদরিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে। শুক্রবার এই মামলায় কেন্দ্রকে যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেলকে সাহায্যের কথা বলা হয়। ফের তিন সপ্তাহ পরে হবে শুনানি।
প্রসঙ্গত, গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন রাজভবনের এক মহিলা কর্মী। অভিযোগ অনুযায়ী, রাজভবনেই যৌন হেনস্থার শিকার হন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয় কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানায়। এদিকে এই গোটা ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছিলেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি রাজভবনের তরফে একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু, কী ভাবে অনুমতি ছাড়া তাঁর ছবি প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ওই ‘নির্যাতিতা’।
অন্যদিকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হলেও ভারতীয় সংবিধানের ৩৬১ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপাল বেশ কিছু বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। রাজ্যপাল পদের অন্যতম রক্ষাকবচ হল, পদে থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা চালানো যাবে না। ফলে বোসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় তদন্ত করা সম্ভব হয়নি। অতঃপর সংবিধানের ৩৬১ নম্বর ধারায় রাজ্যপালকে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের শরনাপন্ন হন রাজভবনের ওই মহিলা কর্মী। এবার তাঁর আবেদন শুনতে রাজি হল সর্বোচ্চ আদালত। এই মামলার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, ‘অভিযুক্ত যে পদেই থাকুন বা যতই ক্ষমতাধারী হোন না কেন, যৌন হেনস্থার মতো অপরাধ লুকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে নির্দিষ্ট দিশা দেখাবে।’