মাঝে আর মাত্র ১ দিন। তারপরেই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ সমাবেশ। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর এটাই হতে চলেছে তৃণমূলের প্রথম বড় মাপের জমায়েত। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ও উদ্দীপনায় টগবগে গোটা দল। জেলায় জেলায় যেমন চলছে প্রস্তুতি সভা, তেমনই কলকাতায় চলছে মঞ্চ বাঁধার কাজ। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘মঞ্চের কাজ চলছে। পাশাপাশি জেলায় জেলায় প্রস্তুতি সভাও চলছে। শুক্রবার থেকেই কিছু কিছু করে লোকজন আসতে শুরু করবে।’ লোকসভা ভোটের পর ২১ জুলাইয়ের সভা, সেক্ষেত্রে এবারের সভায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে নিশ্চিতভাবেই বিশেষ কোনও বার্তা থাকবে বলেই মনে করেন দেবাশিস কুমার। একইসঙ্গে সমাবেশে যে প্রচুর মানুষের জমায়েত হবে, সেই বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত তিনি।
এই বছর মূল মঞ্চের আয়তন করা হচ্ছে ৫২/২৪ ফুট। সেখানেই থাকবেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নব নির্বাচিত সাংসদ, বিধায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা মন্ত্রীরা থাকবেন সেই মঞ্চে। এছাড়াও থাকছে আরও একটি মঞ্চ। সেটির আয়তন ৪৮/২৪ ফুট। সেই মঞ্চে বসবেন বিভিন্ন পুরসভার কাউন্সিলররা।
এখানেই শেষ নয়, আরও একটি মঞ্চ করা হচ্ছে। সেই মঞ্চে থাকবেন শহিদ পরিবারের সদস্যরা। সেই মঞ্চের আয়তন হবে ৪০/২৪ ফুট। সেই মঞ্চেই ২১ জুলাইয়ে যাঁরা শহিদ হয়েছিলেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা থাকবেন। মূল মঞ্চতে ওঠার জন্য সিঁড়ি নয়, থাকতে চলেছে র্যাম্প। যার উচ্চতা হবে ১০,১১ ও ১২ ফুট। এবারও থাকছে ১৩ জায়ান্ট স্ক্রিন৷ থাকছেন প্রায় ৪০০০ স্বেচ্ছাসেবক।
এদিকে তৃণমূল সূত্রে খবর, ২১-এর সমাবেশ সফল করতে রাজ্যের প্রত্যেক জেলা থেকেই আসছেন বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার উত্তরের জেলা থেকে রওনা দিয়েছিলেন কর্মীরা। শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে এসে পৌছলেন তাঁরা। যোগদানকারীদের সাহায্য করতে প্রত্যেক জেলার স্টেশন চত্বরে খোলা হয়েছে সহায়তা কেন্দ্র।
এদিকে মালদহ থেকে দুই দিনাজপুর, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের স্টেশনে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো, এমনটাই সূত্রে খবর। মিছিল করে এসে তাঁরা ট্রেনে ওঠেন। কোচবিহার লোকসভা আসন জয়ের পরে, এবারে সেই জেলা থেকে প্রচুর কর্মী-সমর্থক আসবেন বলে আশাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বও৷ দিনহাটার বামনহাট স্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে কলকাতা পথে তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। এছাড়াও নিউ কোচবিহার স্টেশন, সন্ধ্যায় পদাতিক এক্সপ্রেস ও সরাইঘাট এক্সপ্রেসেও কলকাতার পথে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা রওনা হয়েছেন বৃহস্পতিবারেই। এরপর শুক্রবার সকালে তাঁরা কলকাতা চলে এসেছেন। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের দেখা যায় সকলের হাতে ছিল দলের পতাকা। স্টেশনের প্লাটফর্মে মিছিল ও দলের স্লোগান দিতে দিতে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা রওনা হন সল্টলেকে ক্যাম্পের পথে। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, এবছরও কর্মীদের নিয়ে কলকাতার এই সমাবেশে তাঁরা যোগ দিতে এসেছেন।
বৃহস্পতিবারের আগে বুধবার সন্ধ্যা থেকেই প্রচুর তৃণমূল কর্মী-সমর্থক রওনা হন কলকাতা অভিমুখে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে কলকাতা অভিমুখে রওনা হয়েছিলেন যাঁরা ইতিমধ্যেই কলকাতার শিবিরে পৌঁছে গেছেন। বৃহস্পতিবার তেভাগা এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক। এদিকে সূত্রে খবর, বালুরঘাট থেকেও তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তাঁরাও কলকাতায় পৌঁছে যাবেন। জেলা থেকে আসা কর্মীদের থাকার জন্য সল্টলেক, কসবা-সহ একাধিক স্থানে ক্যাম্প করা হয়েছে। পাশাপাশি বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর রেল স্টেশন থেকে তৃণমূল কর্মীরা ট্রেনে চেপে রওনা হন কলকাতা অভিমুখে।