লোকসভা ভোটে সাফল্যের পর তৃণমূলের প্রথম বড় কর্মসূচি রবিবার। আর এই কর্মসূচিকে ঘিরে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চকে ঘিরে উপচে ভিড় ছিল কর্মী সমর্থকদের।
তবে প্রতিবছরই একুশে জুলাইয়ের অন্যতম বড় চমক থাকে মেনু। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসে কর্মী-সমর্থকদের জন্য আয়োজন করা হয় খাওয়াদাওয়ার। প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সমর্থকেরা পৌঁছে গিয়েছিলেন ধর্মতলা। এই কর্মসূচির অন্যতম জনপ্রিয় খাবার ডিম-ভাত। কোনও পরিবর্তন না করে প্রতিবছর একই ভাবে এই মেনুই চলে আসছে। কর্মীদের জন্য প্রস্তুত করা হয় ভাত, ডিম, ডাল, সবজি।
ধর্মতলার মঞ্চে পৌঁছানোর আগে রীতিমতো পিকনিকের মেজাজ। সকাল থেকেই কোথাও নজরে আসে লুচি সঙ্গে ঘুগনি বা আলুর দমের ব্যবস্থা তো কোথাও আবার ব্যবস্থা ছিল মাংস-ভাতেরও। অর্থাৎ, একুশের শহিদ তর্পণ বদলে যায় ছোটখাটো একটা পিকনিকে। আর হবে নাই বা কেন, লোকসভা নির্বাচনে ল্যান্ড স্লাইড ভিকট্রি পাওয়ার পর এটাই প্রথম মেগা সমাবেশ। আর এবারের একুশের সভায় যে শহিদ তর্পণের পাশাপাশি জয়ের সেলিব্রেশনও হবে তা আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল হাইকম্যান্ড।
রবিবারের সমাবেশে নজর কাড়ে নানা টুপিও। যার এক-একটি দাম পাঁচ হাজার টাকা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে তিন রঙা এই অভিনব টুপিতে। প্রায় তিন থাক টুপিজুড়ে রাজ্যের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী ইত্যাদি প্রকল্পের কথা তুলে ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে খোঁচা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকেও। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ছবিও গাঁথা হয়েছে। সুভাষগ্রাম, সোনারপুর, বাঁকুড়া থেকে শিল্পীরা এসেছেন তাঁদের এই সব কাজ নিয়ে। অবশ্য সাধারণ টুপিও আছে। দাম ৫০-১০০ টাকার মধ্যে। টুপি বিক্রি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সুভাষগ্রামের এক টুপি বিক্রেতা জানান, তিনি তৃণমূল সমর্থক। তাই এই টুপি তৈরি করেছেন। বিক্রিও হয়েছে ভালই। এরই পাশাপাশি আর এক টুপি বিক্রেতা জানান, ‘আমরা শিল্পী। আমরা সব ধরনের টুপি বানাতে পারি। তবে এই টুপি বানাতে তিন মাস লেগেছে। দিদির অনেক প্রকল্পের কথা এই টুপিতে তুলে ধরেছি। তাই দাম তো হবেই। কিন্তু মানুষের ভালই সাড়া আছে। সবাই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিক্রিও হচ্ছে ভাল।’
এদিকে এই শহিদ দিবস উপলক্ষে কলকাতায় ভিন জেলা থেকে আসা অনেকেই যান কালীঘাটে পুজো দিতে। শুধু কালীঘাটের মন্দিরে যাওয়াই নয়, এঁদের গন্তব্য ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িও পরিদর্শন করা। আর সেই কারণেই এদিন বিশেষ নিরাপত্তা ছিল মমতার বাড়ি ঘিরে।
আর তৃণমূলের ২১ শে জুলাই শহিদ সমাবেশের সঙ্গে বৃষ্টির যোগ প্রথম থেকেই। তৃণমূলের এই মেগা ইভেন্ট প্রায় প্রতিবারই বৃষ্টিতে ভিজেছে। রবিবার ২১শে জুলাইতেও তাঁর ব্য়তিক্রম ঘটেনি। তবে বৃষ্টি হার মানাতে পারেনি মানুষের জনজোয়ার।