জেলাশাসকদের হিমঘর থেকে আলু বের করার নির্দেশ নবান্নর

আলু নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছেতা সামাল দিতে আসরে নামলেন মুখ্যসচিব। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি জেলাশাসকদের হিমঘর থেকে আলু বের করে বাজারে সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে বলেন। তাঁর নির্দেশ, কোনও ভাবেই বাজারে যেন আলুর সঙ্কট তৈরি না হয়। জেলাশাসকদের প্রতি তাঁর স্পষ্ট বার্তা, প্রয়োজনে হিমঘরে যান, আলু বের করে আনুন। আলুর জোগান সচল রাখতে হবে বাজারে।

এদিকে জেলায় জেলায় আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের জেরে বাজারে আলুর জোগান কমছে। ফলে বাড়ছে খুচরো বাজারে আলুর দামও। বুধবার কোথাও কোথাও চন্দ্রমুখি আলুর দাম পৌঁছায় ৫০ টাকায়। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুমবাজি-সহ একগুচ্ছ অভিযোগে সোমবার থেকে যে কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি, সোমবার সেই কর্মবিরতিতে সামিল হননি সিঙ্গুর ও হরিপালের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে তাঁরাও সামিল হন। ফলে সোমবার সিঙ্গুর ও হরিপালের হিমঘর থেকে যে পরিমাণ আলু বাজারে এসেছে, তারও স্টক ফুরিয়েছে। জোগান কম, চাহিদা বেশি, তাই দাম বাড়ছে হু হু করে।

প্রসঙ্গত, আলু ব্যবসায়ীদের পুলিশি হেনস্থার প্রতিবাদে রবিবার থেকে সারা রাজ্যে কর্মবিরতি শুরু করেছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। এর জেরেই বাজারে এবার আলুর আকাল। পাইকারি ব্যবসায়ীরা আলু পাচ্ছেন না। পাশাপাশি খুচরো বাজারেও মিলছে না আলু। যা পাওয়া যাচ্ছে তাও সামান্য পরিমাণে।

কর্মবিরতির জেরে বাজারগুলিতে ওই আলুর জোগানও কমে গিয়েছে। ফল, আকাশ ছোঁয়া আলুর দাম এবং জোগানে ঘাটতি। কলকাতা থেকে শুরু করে বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, ছবিটা প্রায় সব জায়গাতেই সমান। সরকার ও আলু ব্যবসায়ীদের টানাপড়েনে ভোগান্তি বাড়ছে ক্রেতাদের।

এই প্রসঙ্গে বিক্রেতাদের দাবি, হিমঘরের ধর্মঘট না উঠলে এই দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। মঙ্গলবার পাইকারি বিক্রেতারা ৫০ কেজি বস্তা পিছু ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা বিক্রি করেছে। সেই বস্তায় বুধবার ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা হিসাবে বিক্রি হয়। অন্যদিকে প্রতিদিন ৪০ প্যাকেট আলু হিমঘর থেকে বের করে সরকারকে বিক্রি করতে হবে। প্রয়োজনে হিমঘর থেকে আলু বের করে দেওয়া হবে।

এদিকে এই কর্মবিরতি নিয়ে মঙ্গলবার বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলু নিয়ে কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই বুধবার হরিপালে ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না এবং পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। বৈঠক ফলপ্রসূ হলে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির ডাকা কর্মবিরতি উঠে যেতে পারে যে কোনও সময়েই।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − eight =