মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্কের খালে ভেসে আসে এক যুবতীর বস্তাবন্দি দেহ। বুধবার তাঁর দেহের ময়নাতদন্তের পরই পুলিশের হাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। যুবতীর পেটে প্রচুর জল ও কাদা পাওয়া গিয়েছে। ময়নাতদন্তে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে, জীবন্ত অবস্থায় জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ফলে যখন তাঁকে বস্তাবন্দি করা হয়, তখনও তিনি যে জীবিত ছিলেন, তা-ও পুলিশকে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, যুবতীর হাতে বেশ কিছু সুচ ফোটানোর চিহ্ন রয়েছে। তা দেখে চিকিৎসকদের ধারণা, যুবতী মাদকাসক্ত ছিলেন। আবার যুবতীকে জোর করে মাদকাচ্ছন্ন করা হয়েছিল, এমনও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই তথ্য জানার পরই পুলিশের ধারণা, কয়েকজন সঙ্গীর সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার কোনও একটি জায়গায় তিনি মাদক নিচ্ছিলেন। তখনই তিনি মাদকাচ্ছন্ন অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়েন। তাঁর মাথায় একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। কোনওভাবে পড়ে গিয়ে মাথায় ওই আঘাত লাগতে পারে ও তার ফলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন, এমন সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে এমন সম্ভাবনাও রয়েছে যে, যুবতী অচেতন হয়ে যাওয়ার তাঁর সঙ্গী বা সঙ্গীরা মনে করেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাই প্রমাণ লোপাটের জন্যই তাঁকে সাদা নাইলনের বস্তায় পোরা হয়। খালের জলে ফেলার সময়ও তাঁর মাথায় আঘাত লাগতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। সেই ক্ষেত্রে মাথায় আঘাত লাগার কারণে তাঁর আর চেতনা পেরেনি। যদিও তখনও তাঁর মৃত্যু হয়নি। জীবন্ত অবস্থায় বস্তাবন্দি হয়ে জলে ডোবার পরই মৃত্যু হয় ওই যুবতীর।
এদিকে তাঁর কমলা টি শার্ট বা কালো প্যান্টের পকেটে কোনও কিছু পাওয়া যায়নি। যদিও একটি হাতে রয়েছে ঈগলের ট্যাটু। অন্য হাতে লেখা ‘মুবারক’। এই মুবারক তাঁর কোনও সঙ্গীর নাম না কি অন্য কারণে লেখা হয়েছে, তা নিয়েও পুলিশ ধন্দে। ওই যুবতীর পরিবার বা পরিজনরা তাঁর দেহ শনাক্ত করলে পুলিশের পক্ষে তাঁর সঙ্গীদেরও চিহ্নিত করা সুবিধাজনক হবে। কোনও ডেরায় যুবতীকে অচেতন করার পর তাঁকে বস্তাবন্দি করে সাইকেল, বাইক বা গাড়ি করে নিয়ে এসে খালে ফেলা হয়। তাঁকে কেনই বা বাঁচানোর চেষ্টা হয়নি, যুবতীকে ইচ্ছাকৃতভাবে ডুবিয়ে খুন করা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।