নাম বদল হল রাষ্ট্রপতি ভবনের দরবার হল ও অশোক হলের

রাষ্ট্রপতি ভবনের দরবার হল ও অশোক হলের নাম বদল। এই দুই হলের নয়া নাম হল গণতন্ত্র মণ্ডপ ও অশোক মণ্ডপ। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি ভবনের দুই হলের নাম পরিবর্তনের ঘোষণা করেন। হঠাৎ এই নাম পরিবর্তনের কারণ হিসেবে রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও রীতিনীতি ফুটিয়ে তোলার জন্য এমন সিদ্ধান্ত।

রাষ্ট্রপতি ভবনের যে দুই হল ঘরের নাম বদল হল তা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এযাবৎ দরবার হলেই জাতীয় পুরস্কার বিতরণ থেকে উদযাপনের যাবতীয় অনুষ্ঠান হতো। সেই দরবার হলের নাম পরিবর্তন হয়ে এবার নাম হল গণতন্ত্র মণ্ডপ। অশোক হলেও বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো, এবার সেই হলের নাম হল অশোক মণ্ডপ। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রপতি ভবনের পরিবেশ ভারতীয় সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও রীতিনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার চেষ্টা চলছিল। দরবার বলতে ভারতের এক সময়ের শাসক ও ইংরেজদের সমবেত হওয়ার জায়গাকেই বোঝানো হতো, যার প্রয়োজনীয়তা নেই গণতান্ত্রিক ভারতে। প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের সমাজ ব্যবস্থার মূলে নিহিত ছিল গণতন্ত্র। সেই কারণেই দরবার হলের নাম বদলে করা হয়েছে গণতন্ত্র মণ্ডপ।’

অন্যদিকে একেবারে গোড়ার দিকে অশোক হল বলরুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অশোক বলতে বোঝায় এমন ব্যক্তিতে যিনি যন্ত্রণা ও শোকমুক্ত। অন্যদিকে, সম্রাট অশোকের নামও, যা ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বোঝায়। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের প্রতীক এই অশোকস্তম্ভ। এর গভীর তাৎপর্য রয়েছে ভারতের ধর্মীয় ঐতিহ্য, শিল্প ও সংস্কৃতিতে। অশোক হলের নাম পরিবর্তন করে অশোক মণ্ডপ করায় অশোক শব্দটির মূল্যবোধ বজায় থাকল। এছাড়াও ঔপনিবেশিক শাসনের চিহ্নও মুছে গেল।’ নাম পরিবর্তন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। বলেন, ‘এখানে দরবারের কোনও কনসেপ্ট নয়, তবে শাহেনশাহদের কনসেপ্ট রয়েছে।’

এর আগে গত বছর জানুয়ারি মাসে ঐতিহাসিক মুঘল গার্ডেনের ফটক জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার আগে সেটির নাম বদলে তা করা হয় ‘অমৃত উদ্যান’। স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নাম পরিবর্তনের কথা জানানো হয়। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত যে রাস্তা ‘রাজপথ’ বলে পরিচিত ছিল সেই রাস্তার নাম ২০২২ সালে বদলে হয় ‘কর্তব্য পথ’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + 10 =