গত কয়েকমাসে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলার পুরপ্রধান বা কাউন্সিলরদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদও করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এবার প্রকাশ্যে এল সেই মামলার চার্জশিট। ৩২ পাতার চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন পুরসভায় কত বেআইনি নিয়োগের তথ্য এসেছে তাদের হাতে। শুধু তাই নয়, কীভাবে বেআইনি নিয়োগ হল, সেই তথ্যও সামনে এনেছে তারা। অভিযুক্ত অয়ন শীলের সংস্থার হাতেই ছিল নিয়োগের দায়িত্ব। সিবিআই-এর অভিযোগ, নিয়ম খাতায় কলমে মানা হলেও সে সব নিয়মের ধারে কাছ দিয়েও কেউ হাঁটেনি। ১৮৫০ জনের নিয়োগ হয়েছে বিভিন্ন পদে। রয়েছে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পদের কর্মী নিয়োগও। বিপুল অঙ্কের দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির ব্যাপারে ১৩ টি পুরসভার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
সিবিআই-এর দেওয়া তথ্য বলছে, দক্ষিণ দমদম পুরসভায় সবথেকে বেশি বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। আর সেই নিয়োগে নাম জড়িয়েছে ওই পুরসভা তৎকালীন পাঁচু গোপাল রায়ের। আরও বলা হয়েছে যে, ২০১৪ সাল থেকে ওই পুরসভাগুলিতে মোট ৩৬৫০ জনের চাকরি হয়েছিল, যার মধ্যে ১৮১৪ জনের চাকরির আইন মেনে হয়নি।
সিবিআইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে তাদের নজরে রয়েছে কোন পুরসভায় কতগুলি নিয়োগ হয়েছে তাও। যেমন, টাকি পুরসভা- ১৫ বাদুড়িয়া পুরসভা- ৩৯ কামারহাটি পুরসভা- ৪৯ দমদম পুরসভা- ৬১ দক্ষিণ দমদম- ৩২৯ হালিশহর পুরসভা- ৩৯ কাঁচড়াপাড়া পুরসভা- ৩০৩ নিউ ব্যারাকপুর পুরসভা- ৭৪ টীটাগড় পুরসভা- ২২১ রানাঘাট পুরসভা- ১০১ নবদ্বীপ পুরসভা- ১ বীরনগর পুরসভা- ২৬ কৃষ্ণনগর পুরসভা- ২০০ ডায়মন্ড হারবার পুরসভা- ১৮ উত্তর দমদম পুরসভা- ৬৪ বরানগর পুরসভা- ২৭৬ উলুবেড়িয়া পুরসভা- ১৮। এইসব নিয়োগ সন্দেহজনক বলে উল্লেখ করেছে সিবিআই। অভিযোগ, এই নিয়োগ উপযুক্ত পদ্ধতি মেনে হয়নি।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, দক্ষিণ দমদম পুরসভায় সবথেকে বেশি বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাঁচুগোপাল রায় এই প্রসঙ্গে জানাচ্ছেন, সরকারের অনুমোদনেই সবটা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকারি বিভাগ অনুমোদন দিয়েছে। সেই অনুযায়ী নিয়োগ হয়। আলাদা বোর্ড ছিল। তারা নিয়োগ করেছে। এটা বিচারাধীন বিষয়, তাই নিয়োগ বেআইনি কি না, তা বলতে পারবে আদালত।’ অন্যদিকে, কামারহাটি পুরসভার নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি পুর প্রধান গোপাল সাহার। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ জবাবদিহি চায় তার জন্য প্রস্তত আছি।’