রি-নিটের সম্ভাবনা দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ায় এবার ঘোষিত হলো নিট-ইউজি পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফল ও মেধাতালিকা। তাতে দেখা গেল, প্রথম স্থান থেকে ৬১ জনের মধ্যে বাদ পড়ে গিয়েছেন ৪৪ জন। ফিজিক্সের ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে ভুল বিকল্প বেছেছিলেন তাঁরা।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশে নেগেটিভ মার্কিং নিয়ে ৫ নম্বর কাটা যায় তাঁদের। ফলে সংশোধিত ও চূড়ান্ত মেধাতালিকায় প্রথম স্থানে এখন রয়েছেন ১৭ জন। গত ৪ জুন এবারের নিটের ফল বেরোলে প্রথমে দেখা যায়, বেনজির ভাবে ৬৭ জন প্রথম হয়েছেন ৭২০-র পূর্ণমান পেয়ে। এর মধ্যে ৬ জন গ্রেস মার্ক পেয়ে ৭২০ পান। পরে নিট আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) গ্রেস মার্ক প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ৬ জনের নাম প্রথমের তালিকা থেকে বেরিয়ে যায়।
এখন দেখা যাচ্ছে, ফিজ়িক্সের ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর সঠিক দিতে না পারায়, ওই ৬১ জনের মধ্যে ৪৪ জন ৫ নম্বর খুইয়ে ৭১৫ পাচ্ছেন। আর ৭১৬ পেয়েছেন যেহেতু ৭০ জন, তাই প্রথমের তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়া ৭১৫ পাওয়া ওই ৪৪ জনের র্যাঙ্কিং কমপক্ষে ৮৮ পয়েন্ট পিছিয়ে গেল। ওই ৪৪ জন ফিজিক্সের ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর হিসেবে ২ নম্বর বিকল্প বেছেছিলেন।
এনসিইআরটি-র পুরোনো সিলেবাসের বিচারে প্রথমে তা সঠিক হিসেবে বিবেচিত হলেও পরে দিল্লি আইআইটি-র বিশেষজ্ঞ কমিটির রায়ে সেই উত্তরটি ভুল বলে গণ্য হওয়ায় নতুন করে এনটিএ-কে মেধাতালিকা তৈরি করতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সংশোধিত মেধাতালিকা বেরোয় এদিন দুপুরে। তাতে দেখা যায়, সংশোধিত মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া প্রায় ১৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর র্যাঙ্কিং ওই ১৯ নম্বর প্রশ্নের জেরে বদলে গিয়েছে।
কেননা, তাঁরাও ২ ও ৪ নম্বর বিকল্পের মধ্যে ২ নম্বরের ভুল বিকল্পটিই বেছে নিয়েছিলেন উত্তর হিসেবে। গত সোমবারের আগে পর্যন্ত অবশ্য এ বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। সোমবার ৭১১ পাওয়া এক ছাত্রী বিতর্কিত ওই প্রশ্নের উত্তরের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দাবি করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত জানায়, দু’টি উত্তরই একযোগে ঠিক হতে পারে না।
কোনটি ঠিক, তা বিচার করতে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়েন দিল্লি আইআইটি-র অধিকর্তা। সেই কমিটি ৪ নম্বর অপশনটিকেই ঠিক বলে জানায় সুপ্রিম কোর্টে।
এদিকে ৪ জুন ফলপ্রকাশের পরেও দেখা যায়, আশ্চর্যজনক ভাবে ৭২০-তে ৭২০ পেয়েই বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী নজিরবিহীন ভাবে প্রথম স্থান পেয়েছেন। গ্রেস মার্ক পেয়ে যান ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থী। গ্রেস মার্ক প্রত্যাহার করে তাঁদের জন্য ফের পরীক্ষা নেওয়া হয় ২৩ জুন। শুরু হয় সিবিআই তদন্ত।
এরপর বিহার, গুজরাতের গোধরা, কখনও ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ, দিল্লি, নয়ডা, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের নানা জায়গা থেকে নিট দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫০ জনের বেশি গ্রেফতার হয় সারা দেশে।