সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি হয়েছে, এমন তথ্য ও প্রমাণ আগেও সামনে এসেছে। শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ আগেই উঠেছে। প্রকাশ্যে এসেছে সেই সব ওএমআর শিটও। তবে বাংলার আরও এক দুর্নীতির তদন্তে উঠে এল এমনই এক অভিযোগ। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, ফেল করেও হয়েছে চাকরি। আর তা ঘটেছে পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে। সম্প্রতি ওই মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই একটি চার্জশিট পেশ করেছে। কোথায়, কত বেআইনি নিয়োগের কথা জানতে পেরেছে, সেই তথ্য উল্লেখ করেছে তারা। আর এই তালিকায় এক্কেবারে ওপরে রয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। তথ্য বলছে, দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ৩২৯ জনের নিয়োগ ঘিরে রয়েছে প্রশ্ন। এছাড়াও ওই পুরসভাগুলির তালিকায় আছে টিটাগড়, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, বরাহনগর সহ একগুচ্ছ নাম। সেই চার্জশিটেই সিবিআই দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাঁচু গোপাল রায়ের নামও রয়েছে। তাঁর আমলেই নিয়োগে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছিল বলে অভিযোগ। তদন্তকারী সংস্থা বলছে, ২০২০ সালে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় গ্রুপ সি ও ডি পদে একই দিনে মোট ২৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই দিন ২৯ জনের মধ্যে মজদুর পদে চাকরি পেয়েছিলেন ২৭ জন। লিখিত পরীক্ষায় তাঁরা প্রত্যেকে পেয়েছিলেন একই নম্বর। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৫৫, আর মৌখিক পরীক্ষায় সবাই ফেল করেছিলেন। এছাড়া দু’জন পিয়ন পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁরা দুজনেই লিখিত পরীক্ষায় পেয়েছিল ৭৫, তাঁরাও মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন বলে দাবি সিবিআই-এর।
সিবিআই তদন্ত করে দেখেছে যে, একইদিনে ওই সব নিয়োগের অর্ডারে সই করা হয়েছিল। এই নিয়োগ অর্ডারে সই করেছিলেন তৎকালীন চেয়ারম্যান পাঁচু গোপাল রায়। প্রশ্ন উঠেছে, প্রশ্নপত্র তৈরির বিষয়েও। সিবিআই বলছে, প্রশ্নপত্র বা উত্তর তৈরির জন্য কোনও এক্সপার্ট রাখা হয়নি। যে সংস্থাকে পরীক্ষার বরাত দেওয়া হয়েছিল, সেই সংস্থার কর্তা তথা অভিযুক্ত অয়ন শীলই নিজে প্রশ্ন তৈরি করেছিলেন বলে অভিযোগ।
তবে পাঁচু রায় এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইতিমধ্যেই। তাঁর দাবি, সরকারের অনুমোদন প্রাপ্ত বোর্ডই ওই পরীক্ষা নিয়েছিল। নিয়ম মেনেই নিয়োগে হয়েছিল। নিয়োগ বেআইনি কি না, সেটা আদালত বলবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।