বঙ্গে অ্যান্টিভেনাম তৈরির দাবি বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির

বর্ষায় সাপের কামড়ে মৃত্যু, এই ধরনের খবর রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায়। কিন্তু বাংলায় তৈরি হয় না কোনও অ্য়ান্টি ভেনাম। এর ফলে অকালে ধরে পড়ে অনেক প্রাণ। তাই বাংলাতেই এবার অ্যান্টি ভেনামতৈরির দাবি জানালেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি৷

এদিকে সাপের কামড় ও তার চিকিৎসা নিয়ে এখন অনেক সচেতনতা বাড়লেও এর পিছনে এখনও কিছু কুসংস্কার রয়ে গিয়েছে। এখনও গ্রামের দিকে অনেকেই সাপে কামড়ালে হাসপাতালের বদলে ওঝা বা গুনিনের কাছে যাওয়াটাই রেওয়াজ। অনেকে রোগীকে হাতুড়ে ডাক্তার বা কবিরাজের কাছেও নিয়ে যান। ফলে অনেক সময়েতেই দেরি হয়ে যাওয়ার কারণে রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। এর বদলে যদি রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তাহলে তাঁর বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এদিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও একশো শতাংশ রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তার প্রধান কারণ ভৌগলিক অবস্থান। এক জায়গার সাপের বিষের সঙ্গে আর এক জায়গার সাপের বিষের বিস্তর পার্থক্য। ফলে অনেক সময় দেখা যায় স্থান বিশেষে সাপের ওষুধ কার্যকর হয় না। আমাদের রাজ্যে এক সময় সাপের বিষের ওষুধ বা অ্যান্টিভেনাম তৈরি করা হলেও বর্তমানে তা আসে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু থেকে।

তাই এবার সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে রাজ্যেই এই অ্যান্টিভেনাম তৈরি করার দাবি বিধানসভাতেই জানালেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। এই প্রসঙ্গে ভাঙড়ের বিধায়ক জানান, ‘সরকারি তথ্য অনুযায়ী এক বছরের রাজ্যে সাপের কামড়ে মারা যায় গড়ে প্রায় ৮৫০ জন। যতজন মানুষকে সাপে কামড়ায় তার মধ্যে মাত্র ২২ শতাংশ হাসপাতালে যায়। ফলে বেসরকারি ভাবে মৃত্যুর সংখ্যাটা হয়তো আরও অনেক বেশি।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘হাসপাতালে যাওয়ার পর তাঁদের যে প্রতিষেধক দেওয়া হয় তা আনা হয় তামিলনাড়ু থেকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো সেই ওষুধ প্রয়োগ করা হলেও অনেকক্ষেত্রেই সেটা কার্যকর হয় না। ফলে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ কারণ ভৌগলিক অবস্থানগত তারতম্য। তামিলনাড়ুর চন্দ্রবোড়া সাপ আর বাঁকুড়ার চন্দ্রবোড়া সাপের বিষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।’ এখানেই শেষ নয়, রাজ্যে অ্যন্টিভেনাম ড্রাগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য়, ‘তামিলনাড়ুতে যেহেতু সেখানকার সাপের বিষের প্রতিষেধক তৈরি করা হয় এখানে সেটা খুব ভাল ফল দেয় না। এক সময়ে আমাদের রাজ্যেও অ্যান্টিভেনাম তৈরি করা হত। কিন্তু এখন তা বন্ধ রয়েছে। আমি স্পিকারের মাধ্যমে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে এই রাজ্যেই অ্যান্টিভেনম তৈরি করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আশা করি তিনি ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − twenty =