একের পর এক ঘটনা সামনে আসছে নিয়োগ দুর্নীতিকে ঘিরে। শিক্ষা দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে ইডি ও সিবিআই একযোগেই দাবি করছিল, এই দুর্নীতির জাল কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত, সেটার হদিশ পাওয়াই সব থেকে কঠিন। ইতিমধ্যেই এই মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক হেভিওয়েট নেতা জেলবন্দি। তাঁদের দিকে যখন ফোকাস আধিকারিকদের, তখন প্রকাশ্যে এল, দুর্নীতির নিচু তলার লোকেরাই চাকরি বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ টাকা কামিয়েছেন। এরই সূত্র ধরে তদন্তকারীরা এমন ৯১ টি কোম্পানির হদিশ পেয়েছেন, যাদের সম্পত্তির পরিমাণ ৬৭ কোটি টাকা।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ৯১ টি কোম্পানি হল অ্যাগ্রো ফার্মিং সংস্থা। তারই মুনাফা হিসাবে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি টাকা। খাতায় কলমে ২০১৭ সালের পর থেকে তৈরি হওয়া কোম্পানিগুলির অডিট রিপোর্ট দেখে ইডি আধিকারিকরা স্পষ্টই জানিয়েছেন, কার্যত সেখানে কোনও ব্যবসায়িক লেনদেন নেই। আর এখানেই প্রশ্ন, ব্যবসায়িক লেনদেন ছাড়াই কীভাবে ৬৭ কোটি টাকা রোজগার হল তা নিয়েও। আরও উল্লেখ্য, ওই ৬৭ টি অ্যাগ্রো ফার্মিং সংস্থার জমির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭ কাঠা।
ইডি আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, আসলে শিক্ষা দুর্নীতির টাকাই ঢুকেছে ওই ‘চাষের ক্ষেত্রে’। তদন্তকারীরা এও জানাচ্ছেন, মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের একাধিক ইমেল খতিয়ে দেখে এর প্রমাণ মিলেছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি ইমেলে নাম উল্লেখ করে তিনি ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রোগ্রাম অফিসার সমরজিৎ আচার্যকে পাঠিয়েছেন। সেই নথি ইতিমধ্যেই উদ্ধার হয়েছে। যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁদেরও বয়ান রেকর্ড হয়েছে।
ইডি আধিকারিকদের ইঙ্গিত কেবল মাত্র নবম দশম এবং একাদশ দ্বাদশ পর্যায়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার নিয়োগ থেকেই এই বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন প্রসন্ন। পাশাপাশি, গ্রুপ ‘সি’ এবং গ্রুপ ‘ডি’ নিয়োগেও সমান ভাবে যুক্ত প্রসন্ন এবং প্রদীপ।