মঙ্গলবারেও থমথমে টলিপাড়া। নেই কর্মব্যস্ততা। ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন’-এর হাঁকডাকও থেমেছে। সেই অচলাবস্থা কাটাতে অবশেষে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেব, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং পরিচালক গৌতম ঘোষ।
ফেডারেশনের সঙ্গে প্রযোজক-পরিচালকদের দ্বন্দ্বের কারণে সোমবার থেকে টলিপাড়ায় ধারাবাহিক-সিনেমার সমস্ত শ্যুটিং বন্ধ। নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে মমতা শ্যুটিং শুরু করার নির্দেশ দেন। দেব, প্রসেনজিৎদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বার্তা দেন তিনি। পাশাপাশি ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বসে কথা বলার পরামর্শও দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। টেকনিক্যাল সব সমস্যা দেখতে বলা হয়েছে অরূপ বিশ্বাসকে।
পরিচালকদের কর্ম বিরতির জেরে আপাতত সব শ্যুটিং বন্ধ। টেকনিশিয়ান, এনটি-১, দাসানি-সহ অন্যান্য স্টুডিওগুলোও থমথমে। এদিকে সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। ফেডারেশন নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। পরিচালকরাও তাঁদের দাবি থেকে পিছপা হননি।
নবান্ন সূত্রে খবর, টলিপাড়ার জট কাটাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেন দেবকে। তারপরই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে দেব তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিয়ে আসেন। আপাতত যাতে শ্যুটিং শুরু করা যায়, তেমনই চেষ্টা চলছেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবারই এই ইস্যুতে দেব জানান, যতক্ষণ না সমাধান হচ্ছে মনে হয় স্ট্রাইক চলবে। আমি চাই তাড়াতাড়ি সমাধান হোক এবং সুস্থ একটা পরিবেশ তৈরি হোক। যেখানে দু’পক্ষই যেমন সম্মানটা পায়। কাজটাও যেন দ্রুত শুরু হয়। বাংলা সংস্কৃতির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। অনেকেই বাংলায় কাজ করতে চায়। অন্যদিকে আবার দুপুরে দফায় দফায় বৈঠক করেন চলচ্চিত্র জগতের নীতি নির্ধারকেরা। টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ানস্ স্টুডিয়োয় সাংবাদিক বৈঠক করে ফেডারেশন। তারপর সন্ধ্যায় সেখানেই বৈঠকে বসে ডিরেক্টর্স গিল্ড। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা এবং টেকনিশয়ানরা যে আলাদা, সেটা আজ প্রথম জানলাম। এখানে আমরা-ওরা এই তত্ত্ব নিয়ে নয়, সমস্যার সমাধান খুঁজে পেতে একজোট হয়েছি। সেখানে স্লোগান থাকবে না। অঞ্জনের কথায়, রাহুলকে কেন্দ্র করে যে সমস্যার সূত্রপাত হয়েছিল, আজা তা ৪০০ জন পরিচালকের সমস্যা।’ পরিচালকদের অভিযোগ, ফেডারেশন তাদের নিজেদের ইচ্ছে মতো একতরফা আইন তৈরি করে। ফলে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে কাজের পরিসর ক্রমশ কমছে। ফিরে যাচ্ছেন বলিউডের বহু নির্মাতা।