ভোটের আগেই গ্রেপ্তার হতে পারেন, এই আশঙ্কায় রাতের ঘুম উড়েছে বিরোধী দলের প্রার্থীর ও কর্মীদের। এই আশঙ্কা থেকেই এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী দলের প্রার্থীর ও কর্মী সমর্থকরা। দুই মেদিনীপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ সহ বেশ কিছু জেলার বিরোধী দলের প্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। ১৫ জুলাই অবধি রক্ষাকবচের আবেদন করা হয়েছে। দুপুর ২টো বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে সব মামলার শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে বিভিন্ন জেলায় দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় বিরোধী দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন জমায় বাধা দেওয়ার ঘটনায়। এমনকী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। মনোনয়ন পর্ব মিটে যেতেই এবার নতুন আশঙ্কার বিরোধী প্রার্থীরা।
এদিকে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হতে আদালতে একের পর এক মামলা হয়েছে। ভোট ঘোষণার দিন রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা প্রকাশ করতে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে। কমিশনের মনোভাব বোঝার পর পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। মনোনয়নর দিনক্ষণ বৃদ্ধি ও অনলাইনে মনোনয়ন জমা নেওয়ার আবেদন করা হয় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের বেঞ্চে। এরপর কয়েক দফা শুনানির পর রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও সরকার। কিন্তু দেশের শীর্ষ আদালতও সাফ জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে তাঁরা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারে। সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পর ২২ জেলার জন্য ২২ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দেয় কমিশন। এই সিদ্ধান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় ২০১৩ সালের তুলনায় বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আদালতের নির্দেশের পর আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠায় কমিশন। তবে একনও এই বাহিনী নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, ৮০০ কোম্পানির মধ্যে এই মুহূর্তে রাজ্যে এসে পৌঁছেছে ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী। বাকি বাহিনী কবে আসবে, আদৌ আসবে কি না, সেই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী আসবে না ধরে নিয়েই তাঁরা পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ৮ জুলাই কী হবে তা নিয়ে কারও কাছেই স্পষ্ট কোনও ধারনা নেই।