তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সামনে আসছে নিত্য-নতুন তথ্য।বৃহস্পতিবার দিনভর জেরার পর মধ্যরাতে দেগঙ্গার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমান ও তাঁর ভাই আলিফ নুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুপুরে তাঁদের আদালতে পেশ করা হয়।
এদিন আদালতে একাধিক তথ্য পেশ করে তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাদের দাবি, এসএসকেএম হাসপাতালে শুয়ে থেকেই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আনিসুর ওরফে বিদেশ ও আলিফ নূর ওরফে মুকুলকে প্রতি মাসে ১০ লক্ষ টাকা সুদ বাবদ জমা দিতে বলেন। ইডি আরও জানিয়েছে, জ্যোতিপ্রিয়র হিসেব রক্ষক শান্তনু ভট্টাচার্যের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সেইসব ডিজিটাল প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, একটি ফোল্ডারে উল্লেখ ছিল বিদেশ ও মুকুলের নাম। ১০ লক্ষ টাকা করে সুদ দেওয়ার বিষয়টিও ওই শান্তনুর থেকে পাওয়া নথিতেই মিলেছে। ইডি সূত্রের খবর, এই দুই ভাই ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়র ‘মানি মেশিন’। তাঁদের মাধ্যমে ৪৫ কোটি টাকা গিয়েছে তিনটি সংস্থায়। অভিযোগ, মুকুল ও বিদেশ তাঁদের আত্মীয়দের ভুয়ো কৃষক বানিয়ে ধান কেনার টাকা নেন। এরপর তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রীর ভাগের টাকা এই সব সংস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হত।
বিদেশ ও মুকুল নিজেদের কৃষক বলে দাবি করেন। কৃষক বলেই পরিচয় দেন সরকারের কাছে। এভাবেই তাঁরা টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ ইডি-র। আধিকারিকদের দাবি, সরকারি আটার সিল ও স্ট্যাম্প পাওয়া গিয়েছে বিদেশের রাইস মিল থেকে।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, ইডি-র আইনজীবী বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করে চলেছি হুজুর। এতে মানুষের টাকা জড়িত। টাকা বিদেশেও পাচার হয়েছে।’ এরপরই বিচারক জানতে চান, ধৃত এই দু’জন যে রেশন দুর্নীতিতে যুক্ত তার প্রমাণ ইডি-র হাতে রয়েছে কি না সে ব্যাপারেও। তবে রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত আনিসুর ও আলিফ নূর অবশ্য জামিন চাননি এদিন। আদালত সূত্রে খবর, বিদেশ-মুকুলের ২০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১২ অগাস্ট ফের আদালতে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।