জার্মানি-৩ : ভারত-২
(গঞ্জালো ১৮, ক্রিস্টোফার ২৭, মার্কো ৫৪) (হরমনপ্রীত ৭, সুখজিৎ ৩৬)
১৯৮০ সালের মস্কো অলিম্পিকে শেষবার হকির ফাইনালে উঠেছিল ভারত। প্যারিসে আবার ফাইনাল হতে পারত। টোকিও গেমস থেকে এসেছিল ব্রোঞ্জ। এবারও সেই সম্ভাবনাই প্রবল।অথচ, এই ক’দিন আগেও মনে হচ্ছিল, হরমনপ্রীত সিংয়ের এই ভারত খুব বেশি দূর এগোবে না। বড্ড বেশি হরমনপ্রীত নির্ভর। সঙ্গে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না কোনও ফরোয়ার্ডকে, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না খেলানোর লোকটাকেও। ছিল না গোল করানোর লোকও। সেখানে নক আউট গেলেই তো অনেক!
তবে পরীক্ষায় না বসলে যেমন ছাত্র চেনা যায় না, মাঠে না নামলে তেমন টিম। আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, গ্রেট ব্রিটেন— পর পর হারিয়ে ভারতীয় হকি টিম দেখিয়ে দিল, হকিতে আবার সূর্যোদয় হচ্ছে ভারতের। জার্মানির বিরুদ্ধে জিততে ড্র, ড্র করতে করতে ২-৩ হার। ফাইনালের রাস্তা তাতেই অবরুদ্ধ হয়ে গেল। আক্ষেপ থাকছে। কিন্তু পদক হাতছাড়া, তা বলা যাচ্ছে না। প্যারিসে আবার ব্রোঞ্জের জন্য নামবে ভারত। সোনালি দিন ফিরল না হয়তো, কিন্তু এই ভারত অলিম্পিক সোনা ফেরাতে পারে দেশে। চার বছর পরের অলিম্পিক থেকে। হরমনপ্রীত, অভিষেক, ললিতদের এই আগুন দেখে ফেলল হকি বিশ্ব। স্পেনের বিরুদ্ধে নামবে ভারত ব্রোঞ্জ ম্যাচে।
তবে জার্মানির কাছে ভারত হারর প্রথম কারণ নিঃসন্দেহে অমিত রুইদাসের মতো ডিফেন্ডারের না থাকা। তাও ফাইনালের স্বপ্নে লড়াই করেছে ভারত। ৭ মিনিটের মাথায় হরমনপ্রীতের পেনাল্টি কর্নার থেকে গোলে ১-০। এই অলিম্পিকে ৯ গোল হয়ে গেল হরমনপ্রীত সিংয়ের। প্রথম কোয়ার্টার ভারতেরই দখলে ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ার্টার থেকে আবার খেলা ধরে নেয় জার্মানি। গঞ্জালো ১-১ করেন ১৮ মিনিটে। পরের দুটো গোল ক্রিস্টোফার ও মার্কোর। সুখজিৎ সিং তার আগে অবশ্য ২-২ করে ফেলেছিলেন।
চতুর্থ কোয়ার্টারে ভারত একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ফোর্থ কোয়ার্টারের শেষ দিকে পেনাল্টি কর্নার বাঁচিয়ে টিমকে খেলায় রেখেছিলেন। আবার নিশ্চিত গোল সেভ করেন শ্রীজেশ। সঞ্জয়ের গোললাইন সেভ। টুকরো টুকরো লড়াইয়ের এমন কত ছবি! সে সব বয়েই এখন জীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন শ্রীজেশ, মনপ্রীতরা। গতবারের মতো এবারও যদি ব্রোঞ্জ আসে, হকিতে হারিয়ে ফেলা বিশ্বাসটা ফিরবে।