রুপো পেয়েও ইতিহাস গড়লেন নীরজ

খেলার দুনিয়া কারও মুঠোয় থাকে না। নায়ক বদলে যায়। হাসি পাল্টে যায়। বদলে যায় মুখ। স্রেফ মুহূর্তে। প্যারিস তো তাই দেখল। ৯২.৯৭ মিটার দ্বিতীয় থ্রো ছিল পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিমের। তাতে অলিম্পিক রেকর্ড। সঙ্গে সোনাটাও কেড়ে নিলেন নীরজ চোপড়ার!

এর আগে অলিম্পিক থেকে কি সোনা জিতেছেন কোনও পাকিস্তানি? অবশ্যই। তবে ৩টে সোনার পদক এসেছিল হকি থেকে। ১৯৯২ সালে শেষবার বার্সেলোনা অলিম্পিক থেকে পদক পেয়েছে পাক হকি। আর অলিম্পিকে ব্যক্তিগত ইভেন্টে পদক? মাত্র দুই পাক অ্যাথলিট সেই বিরল তালিকায়। ১৯৬০ সালে কুস্তি থেকে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন মহম্মদ বশির। আর ১৯৮৮ সালে সিওল অলিম্পিকের বক্সিং থেকে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন হুসেইন শাহ। ৩৬ বছর পর আবার অলিম্পিক থেকে বক্তিগত পদক পাকিস্তানের।

৮৯.৩৪ থ্রোতে ফাইনালে উঠেছিলেন নীরজ। জ্যাভলিন ফাইনালেও সেরাটাই দিয়েছেন। নীরজের প্রথম থ্রো-টা ছিল ফাউল। কিন্তু দ্বিতীয় থ্রোতে কোয়ালিফাইং রাউন্ডকেও ছাপিয়ে যান। ৮৯.৪৫ মিটার মরসুমের সেরা থ্রো করে। নীরজ ততক্ষণে জেনে নিয়েছেন, পোডিয়ামে উঠবেন ঠিক, কিন্তু জনগণমন শুনতে পাবেন না। রুপোতেই থামতে হবে তাঁকে। সোনা খোয়ানো নীরজ ৯০ পার করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। হল আর্শাদের। পাক-পঞ্জাবের ছেলে পর পর দু’বার থ্রো করলেন ৯০মিটারের বেশি। যেন এক রাতে দুনিয়ার রং পাল্টে ফেললেন আর্শাদ। ২০০৮ সালে বেজিংয়ে জ্যাভলিনে অলিম্পিক রেকর্ড করেছিলেন নরওয়ের আন্দ্রেয়াস থোরকিল্ডসেন। ১৬ বছর পর সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ওয়াঘার ওপারের এক ছেলে। আর পদক প্রাপ্তির নিরিখে দেখলে, ৩২ বছর পর আবার অলিম্পিক পদকের খোঁজ পেল পাকিস্তান। আর তাই কিনা সোনায় মুড়ে দিলেন আর্শাদ নাদিম।

নীরজ তবু নায়ক। নীরজ তবু ইতিহাসে। সুশীল কুমার, পিভি সিন্ধুর মতো পর পর দুটো অলিম্পিকে পদক ফলালেন। সোনা ও রুপো। অ্যাথলেটিক্সে এমন নায়ক যে বিরল!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − two =