২০২৪-এ প্রথম কলকাতার রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের নার্সরা। সেই কারণে বাধ্যতামূলক ভাবে তাঁদের তিন দিন কুচকাওয়াজের মহড়ায় অংশ নিতে হবে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে এই মর্মে এক বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়েছে। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, নার্সের অভাবে একদিকে যখন হাসপাতালে ঠিকমতো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না, স্টাফ কম থাকায় নার্সরা যখন ঠিকমতো ছুটি পাচ্ছেন না, তখন এমন সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
এদিকে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার জন্য মোট ৬৬ জন নার্সের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে সাধারণ নার্সিং স্টাফ ছাড়াও জয়েন্ট নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট, ডেপুটি নার্সিং সুপারিন্টেডেন্ট, হেলথ সুপারভাইজার পদমর্যাদার নার্সরাও রয়েছেন। মহিলা এবং পুরুষ দু’ধরনের নার্সকেই কুচকাওয়াজের জন্য বাছা হয়েছে। এদের সিংহভাগই এসএসকেএম, মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, ইনস্ট্রিটিউট অফ সাইক্রিয়াট্রি এবং ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে কাজ করেন। শুক্রবার থেকে তাঁদের রিহার্সাল শুরু হয়েছে। আগামী ১০ এবং ১৩ তারিখেও এই মহড়া চলবে। শনিবার যাঁদের কুচকাওয়াজের রিহার্সাল ছিল তাঁদের ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে এসএসকেএমের ওএসডি তথা প্রাক্তন নার্সিং সুপারিন্টেডেন্টের কাছে রিপোর্ট করতে হয়।
সরকারি হাসপাতালের নার্সরা যে ইউনিফর্ম পরে ডিউটি করেন একই পোশাকে তাঁদের কুচকাওয়াজের রিহার্সালে আসতে হবে। নার্সদের সংগঠন নার্সেস ইউনিটির সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘অনেক সরকারি হাসপাতালে ৫০-৬০ শতাংশ নার্সিং স্টাফ কম রয়েছেন। সেজন্য নার্সদের সহজে ছুটি দিতে চায় না কর্তৃপক্ষ। নার্সের অভাবে হাসপাতালে ঠিকমতো পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। তখন নার্সদের দিয়ে কুচকাওয়াজে হাঁটানোর কোনও মানে হয় না।’
রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘কে কী বললো তা দিয়ে তো সরকার চলবে না। আমি এসব নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’ স্বাস্থ্য দপ্তরের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, ‘বিভিন্ন সরকারি দপ্তর স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। স্বাস্থ্য দফতর থেকেও ট্যাবলো থাকে। নার্সরা স্বাস্থ্য পরিষেবার একটা অঙ্গ। তাই রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে তুলে ধরার জন্য এবার আমরা নার্সদের কুচকাওয়াজে শামিল করাচ্ছি। এতে তাঁদের গরিমা বাড়াবে।’