‘আমি ক্ষমতার মায়া করি না’। আরজির কর কাণ্ডে এবার বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা তোপ দাগলেন, ‘ভাবছে বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে সেটা টেনে এনে যদি ক্ষমতা দখল করতে পারি’।
আরজিকর কাণ্ডে উত্তাল রাজ্য। বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও। নিহত চিকিত্সকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রবিবারের মধ্যে যদি পুলিস এই কেসের সুরাহা করতে না পারে তাহলে আমরা এই কেস সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেব’। কিন্তু সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মঙ্গলবার আরজিকর মামলা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। এদিকে আরজি কর কাণ্ডে যখন তদন্ত শুরু করল সিবিআই, তখন বিরোধীদের নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘ভাবছে বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে সেটা টেনে এনে যদি ক্ষমতা দখল করতে পারি। আমি বলি, আমি ক্ষমতার মায়া করি না। আমি বলি, যতদিন বাঁচব, মানুষের সেবা করে যাব। মানুষকে ন্য়ায় বিচার দিয়ে যাব। যার জন্য আমি ফাঁসির দাবি করেছিলাম, পুলিসকে দিয়ে অনেক কাজ করিয়েছিলাম’।
এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘কেউ ব্যবহার করেনি। আর যদিও ব্যবহার করেও থাকে, ব্যবহার করার সুযোগটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করে দিয়েছেন। কারণ রাজ্যে যদি একটা ঘটনা ঘটত, তাহলে দুর্ঘটনাবশত ঘটে গিয়েছে এটা বোঝা যেত। সবচেয়ে বড় বিষয়, তিনি একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, তার রাজ্যত্বে সবচেয়ে বেশি মহিলা অপমান এখানে হচ্ছে। এত মহিলার অপমান হয়েছে এবং প্রতিক্ষেত্রে উনি বলে দিচ্ছেন, ওই মহিলার চরিত্র খারাপ ছিল। ওই মহিলার দোষ ছিল। একটা কেস কেউ বলতে পারবে, যেখানে উনি নির্যাতিতা মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যেকবার ধর্ষণকারী কিংবা খুনি তাঁর পাশে উনি দাঁড়িয়েছেন। এটাই দুর্ভাগ্য। সেকারণের জন্য এই কেসের ক্ষেত্রে উনার যে ব্যবহার, বক্তব্য, ভাইপোর যে বক্তব্য, পুলিশের কর্মকাণ্ড দেখার মানুষ হতাশ। অতএব যদি কেউ কাউকে ব্যবহার করে থাকে, তাহলে আমি মনে করব সেটাসঠিক কাজ আছে। কারণ, এই পদে থাকা যোগ্যতা উনি হারিয়েছেন। এতটুকু অনুশোচনা থাকত, তাহলে উচিত ছিল পদত্যাগ করা।’
সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘ক্ষমতার আকর্ষণ নেই। আমরা ক্ষমতায় বহুদিন ছিলাম। ক্ষমতায় বহুদিন নেই। ক্ষমতা আমাদের কাছে বিষয় নয়। আসলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন যে মানুষ আন্দোলন করছে। প্রবাহটা এত গতি পেয়েছে যে, দল-মত-নির্বিশেষে লোকে বলতে চাইছে, আমরা বিক্ষোভ করব, বিদ্রোহ করব। দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে গিয়েছে।’ তাঁর মতে, ‘সরকারি হাসপাতালে একজন সরকারি ডাক্তার, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হল! অভিনব জিনিস! পশ্চিমবঙ্গের তো হয়ইনি, ভারতের কোথাও হয়নি।’