এসইউসিআই-এর ডাকা বনধের বিক্ষিপ্ত প্রভাব জেলায় জেলায়

আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার যে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে এসইউসিআই তাতে জেলায় জেলায় বনধের বিক্ষিপ্ত প্রভাব পড়েছে। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সক্রিয় প্রশাসনও। বনধ ব্যর্থ করার ব্যাপারে আগেই কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তবে এসইউসিআই-এর এই সাধারণ ধর্মঘট ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বেশ কিছু জেলায়।এসইউসিআই কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয় কয়েকটি জায়গায়।

এসইউসিআইএর ডাকা বনধকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় কোচবিহার শহরের সাগরদিঘি চত্বরে। সকাল ১০ টা নাগাদ বনধ সমর্থকেরা মিছিল করলে মিছিল আটকে দেওয়া হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কোচবিহার জেলা আদালতের সামনে। সেখান থেকে বনধ সমর্থকদের আটক করে পুলিশ। স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে থেকে মহিলা বনধ সমর্থকদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এসইউসিআই নেতা নেপাল মিত্র বলেন, ‘পুলিশ ধর্ষকদের গ্রেফতার করছে না, অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর হামলা করছে।’

এদিকে বেহালা, হাজরা মোড়ে এদিন বিক্ষোভ দেখানো হয় এসইউসিআই-এর তরফ থেকে। বনধ সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি লেগে যায়। রাস্তা থেকে বনধ সমর্থনকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয়। যান চলাচল সক্রিয় রাখতে তৎপর ছিল পুলিশ। এদিকে সাধারণ ধর্মঘটে বিশেষ প্রভাব পড়ল না হাওড়া স্টেশনের পূর্ব এবং দক্ষিণ পূর্ব শাখার ট্রেন চলাচলে। রেল সূত্রে খবর, দুটো শাখাতেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। লোকাল ট্রেনের পাশাপাশি দূরপাল্লার ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছাড়ছে বা স্টেশনে পৌঁছেছে। কোথাও কোনও রেল অবরোধের খবর নেই। হাওড়া স্টেশনের বাইরেও অন্যদিনের মতো ট্যাক্সি পরিষেবা এবং বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

অন্যদিকে উত্তর ২৪ পরগনায় এসইউসিআই-এর  বাংলা বনধ-এর সমর্থনে রাজ্যের বারাসাতের বিভিন্ন অঞ্চল প্রদক্ষিণ করে একটি মিছিল এসে বারাসাত চাঁপাডালি মোড় অবরোধ করে। রাত দখলের লড়াইয়ে দুষ্কৃতীরা আর জি কর মেডিকেল কলেজে যে তাণ্ডব চলেছে তার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছে তাঁরা। তবে গোটা জেলায় অনেকটাই স্বাভাবিক পরিস্থিতি। খোলা স্কুল-কলেজ। বনধের মধ্য দিয়েই পড়ুয়া, অফিস যাত্রীরা পৌঁছচ্ছে নিজ নিজ গন্তব্যে। বারাসত থেকে দিঘা যাওয়ার একটি বাসে অশান্তির আশঙ্কায় চালককে হেলমেট পরে বাস চালাতে দেখা যায়।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় শুক্রবার সকালে বনধ সমর্থনকারীরা মেদিনীপুর কালেক্টরেট অফিসের সামনে বাস আটকাতে যায়। বাস চালককে মারধর করে বাস থেকে নামানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বাধা দেয় পুলিশ। এরপরই পুলিশকে ঘিরে ধরে বনধ সমর্থনকারীরা। দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরপরই পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয় বনধ সমর্থনকারীদের। আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয় বনধ সমর্থনকারীদের। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

অন্যদিকে, আরজি কর কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে প্রতিবাদে সরব বিজেপি। দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে প্রতীকী অবরোধের ডাক দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি পর্যন্ত মোমবাতি মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি-র মহিলা মোর্চা। এদিন দুপুর ২টোয় শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা রোকো-র ডাক দেয় বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 14 =