রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পৌঁছনোর আগেই পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠল ধরনা মঞ্চ ভাঙার। বৃহস্পতিবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরজি কর ইস্যুকে হাতিয়ার করে একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচি শুক্রবার থেকে শুরু করার ঘোষণা করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল শ্যামবাজার এক নম্বর মেট্রো গেটের সামনে লাগাতার ধরনা অবস্থান কর্মসূচি।
রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই শ্যামবাজারে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়। শ্যামবাজারে বিজেপির সেই মঞ্চই ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে।
এদিন এই ধরনা মঞ্চের সামনে একে একে বিজেপির নেতা-নেত্রীরা হাজির হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করতেই নতুন করে বাড়ে উত্তেজনা। পুলিশ আটকাতে গেলে, রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বিজেপি নেতা উমেশ রায় সহ একাধিক নেতানেত্রীকে কার্যত চ্যাংদোলা করে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। তৈরি হয় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা।
ধরনা কর্মসূচিতে যোগ দিতে শ্যামবাজারে উপস্থিত হন রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায়, অগ্নিমিত্রা পল, রুদ্রনীল ঘোষ সহ একাধিক নেতানেত্রী। রুদ্রনীল ঘোষ, অশোক কীর্তনিয়ার মতো নেতাদেরও আটক করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, আগেই এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপরও বৃহস্পতিবার রাতে ধরনা মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর শুক্রবার সকালে নেতা-নেত্রীরা শ্যামবাজারে পৌঁছতেই বাড়ে উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফ।
বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, ‘আরজি করে প্ল্যান করে হামলা চালানো হয়েছিল। সেখানে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আর প্রতিবাদ করতে যেতেই পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে।’ অগ্নিমিত্রা পলও প্রশ্ন তোলেন, ‘বুধবার রাতে আরজি করে হামলার ঘটনায় পুলিশের কোনও ভূমিকা দেখা যায়নি, অথচ বিজেপির ধরনায় কেন এত তৎপর পুলিশ?’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রভাবশালীর আত্মীয় আরজি করের ঘটনায় যুক্ত। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী বা পুলিশ প্রশাসন কারও ওপর আমাদের ভরসা নেই।’
উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপি সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের অভিযোগ, ‘আরজি কর ঘটনার বিচার চেয়ে আজ থেকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান শুরু করার কথা ছিল। পুলিশ বলপূর্বক আমাদের মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে। ডেকোরেটর কর্মীদের হুমকি দিয়েছে। আমরা আন্দোলনের পথ থেকে সরছি না। পুলিশ দিয়ে বিজেপির আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’
এদিকে কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, ‘ধরনা কর্মসূচির কোনও অনুমতি ছিল না।’ বিজেপির বক্তব্য, ‘বিজেপির যে কোনও আন্দোলনেই পুলিশের অনুমতি পাওয়া যায় না। আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়।’ শ্যামবাজারে আরজি কর ঘটনার বিচারের দাবিতে ধরনা অবস্থান আন্দোলনের আবেদন জানিয়ে প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের তরফে।