সরকারি পুজো অনুদান প্রত্যাখ্যানে, কড়া প্রতিক্রিয়া কুণালের

আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের উপর যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় সুবিচারের দাবিতে অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি। দুর্গাপুজোর আয়োজনে সরকারি অনুদান ৮৫ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান করেছেন বহু উদ্যোক্তা। সোশাল মিডিয়ায় এনিয়ে শুরু হয়েছে প্রচারও। এই সিদ্ধান্তের কথা প্রথম জানিয়েছে উত্তরপাড়ার শক্তি সংঘ ক্লাব। সে পথে হাঁটছে আরও অনেকে। আর তাদের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ। তাঁর কড়া প্রতিক্রিয়া, ‘পুজো একটা অর্থনীতি। সেই অর্থনীতিকে সচল রাখতেই মুখ্যমন্ত্রীর ওই অনুদান ঘোষণা। যদি আপনারা তা প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে পুজোর সঙ্গে জড়িত সকলকে সাহায্য করবেন।’ শুক্রবারই আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তরপাড়া শক্তি সংঘ পুজো কমিটি  সোশাল মিডিয়ায় এ নিয়ে পোস্ট করে। সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান করে তাঁদের বার্তা,  ‘মেয়ের বিচার দিন, মায়ের পুজো নিজেরা বুঝে নেবো।’ পরবর্তীতে একই সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায় আরও বেশ কয়েকটি পুজো উদ্যোক্তাদের।

আর এই ইস্যুতেই এবার প্রশ্ন তুলে দিলেন কুণাল ঘোষ। পুজোর আয়োজনে সরকারের এই অর্থদান যে নিছকই উৎসবের জৌলুস বাড়ানো নয়, অর্থনীতিকে সচল রাখার অনুঘটক, ভিডিও বার্তায় তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন তিনি।

কুণাল ঘোষের কথায়, ‘এটা একটা ক্যাম্পেন, বীরত্ব দেখানোর। আপনাদের অনেক টাকা আছে, তাই নিচ্ছেন না, ভালো। কিন্তু এই যে আবেগের চিমটি কাটা কথাবার্তা, আসল দুর্গাদের নিরাপত্তা বাড়ান, ৮৫ হাজার টাকা নয়। বাংলায় আসল দুর্গারা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। যাঁরা ৮৫ হাজার টাকা নিচ্ছেন না, তাঁদের বলি, পুজো একটা অর্থনীতি কুমোরটুলির মায়েরা অপেক্ষা করে থাকেন, কবে শরৎকাল আসবে। ডেকরেটর্স, আলো, প্রতিমা শিল্পী, ফুলচাষি, কুটির শিল্প, এই সকলের কাছে যাতে টাকা পৌঁছয়, শ্রমজীবী মানুষ যাতে হাতে টাকা পান, তার জন্য ৮৫ হাজার টাকা দেওয়া। যাঁরা বয়কট করছেন, তাঁরা যেন গরিব মানুষের কাছে সেই টাকা পৌঁছে দিয়ে আসেন। এই টাকা যাতে পুজো অর্থনীতিতে সঞ্চালিত হয়, তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৮৫ হাজার টাকা দিচ্ছেন।’ সঙ্গে এও মনে করিয়ে  দেন, ‘গরিব মানুষ, মুটে-মজুর-কুলিরাও কিন্তু পুজোয় বিসর্জনের দিন রংচঙে জামা পড়ে বিউগল নিয়ে, তাসা পার্টি নিয়ে যায়। যাঁরা টাকা প্রত্যাখ্যান করার আঁতলামি দেখাচ্ছেন, তাঁরা যেন নিজেদের পকেট এই টাকা দেন। বিপ্লবীয়ানা করছেন, করুন। কিন্তু গরিব মানুষ যেন নিজেদের টাকা পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − one =