পরিস্থিতির দাবি মেনে প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই নীরব দেখাচ্ছে অভিষেককে। আর তাতেই বেড়েছে জল্পনা। আর সেই জল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে খোদ তৃণমূলেরই অন্দরে। কারণ, ১৪ অগাস্টের মেয়েদের রাত দখল অভিযানের পর শুক্রবার পথে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ওই মিছিলে তৃণমূলের মহিলা নেত্রী সাংসদ বিধায়ক এবং রাজ্যের প্রথম সারির নেতারা থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন অভিষেক। যদিও মমতার ডাকেই এই পদযাত্রা সংগঠিত হয়েছিল। তবু এর আগে তৃণমূল নেত্রীর ডাকা বহু মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু আরজি কর-এর মতো এত সেনসেটিভ কাণ্ডে শাসক দলের মিছিলে দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের দেখা মিলল না কেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে দল এবং প্রশাসনের কাজ নিয়ে তাহলে কি ক্ষুব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য আসার পর অভিষেক ঘনিষ্ঠ মহলে প্রশাসনের একাংশের কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন অভিষেক। বিশেষত বেশ কিছু পুরসভার কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। ভোটে রাজ্যের ৭৪ টি পুর অঞ্চলে খারাপ ফল, পরবর্তীতে দলে বড়সড় রদবদলের কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক।
শুধু তাই নয়, দলের এবং প্রশাসনের একাংশের কাজে যে তিনি আদৌ খুশি নন সে কথাও স্পষ্ট করেছিলেন তিনি একুশের মঞ্চ থেকে। সম্প্রতি আরজি কর কাণ্ডের পর ধর্ষণ রুখতে এনকাউন্টার তত্ত্বের কথা আমরা শুনেছি তাঁর মুখে। দলমত নির্বিশেষে কাউকে রেয়াত করা উচিৎ নয়, এমন কথাও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু ওটুকুই। উত্তাল এই সময়ে অভিষেক কে তেমন ভাবে পাওয়া যাচ্ছে কোথায়? দলের একাংশে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে ইদানিং তাঁকে দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি আরও একটি ঘটনাও ঘটেছে যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সংবাদমাধ্যমে বিতর্কে কারা দলের তরফে অংশ নেবেন তা এতদিন স্থির করতো ক্যামক স্ট্রিট। এবার এই মিডিয়া সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বর্ষীয়ান সুব্রত বক্সিকে। প্রশ্ন উঠেছে, এই ঘটনা কি কোনো গভীর তাৎপর্য বহন করছে কি না তা নিয়েও।জল্পনা শুরু হয়েছে, এই ঘটনা হিমশৈলের চূড়া মাত্র নয় তো! তাহলে লোকসভা পরবর্তী সময়ে নানা বিষয়ে অভিষেকের সঙ্গে যে দলের একটা বড় অংশের মতান্তর তৈরি হয়েছিল, তা কি এখন আরও স্পষ্ট!