এবার কলকাতা পুরনিগমের স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদ হারালেন শান্তনু সেন। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে তিনি এই পদে ছিলেন বলে খবর। কিন্তু আরজি কর কাণ্ডে মুখ খোলায় মুখপাত্রের পাশাপাশি কলকাতা পুরনিগমের এই পদও খোয়ালেন তিনি। যদিও এই বিষয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর দাবি, এরকম পদ সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই। শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেন কলকাতা পুরনিগমের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁকেও কলকাতা পুরনিগমের অফিশিয়াল কাউন্সিলরদের গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এবার কলকাতা পুরনিগমে শান্তনু সেনের ঘর থেকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হল। খুলে ফেলা হল তাঁর ঘরের গেটে লাগানো নামাঙ্কিত বোর্ডও। এদিকে এই ঘটনায় ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলে কোনও পদই ছিল না। তিনি বলেন, ‘ডাক্তার টিকে মুখোপাধ্যায়ই একমাত্র। আমি জানি না হেল্থ অ্যাডভাইজার কেউ আছেন কি না।’ যদিও সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠমহলে এ নিয়ে শান্তনু সেন মুখও খুলেছেন। জানিয়েছেন, তাঁকে এই পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। কেন তাঁকে না জানিয়ে সরানো হল, সেটা তাঁকে দেখতে হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আরজি করকাণ্ডে মুখ খোলার পরই দল দূরত্ব বাড়িয়েছে শান্তনু সেনের সঙ্গে। তিনি আরজি করের পড়াশোনার মান নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, রসাতলে গিয়েছে এখানকার পঠনপাঠন। মুখপাত্র পদ থেকে রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘কয়েক জনকে খুশি করতে পারলে প্রশ্ন জানা যায়। উত্তর হাতে নিয়ে হলে ঢোকা যায়, টোকাটুকি করা যায়।’ এ নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব উষ্মা প্রকাশ করেন বলে খবর। এরপরই জয়প্রকাশ মজুমদার ঘোষণা করেন, দল মনে করেছে তাই শান্তনু সেনকে মুখপাত্র পদ থেকে সরানো হল। তবে তারপরও দমানো যায়নি শান্তনু ও তাঁর স্ত্রীকে। একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে তাঁরা মুখ খোলেন। এবার পুরনিগমের পদ থেকেও সরানো হল।
শান্তনু সেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘২০২১ ডিসেম্বরের আগে থেকে আমি এই পদে কাজ করছি। কোভিডের সময় মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অতীন ঘোষ, পুরনিগমের স্বাস্থ্যআধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজও করেছি। বিনোদ কুমার সে সময় কমিশনার ছিলেন। প্রতিটা বরোতে গিয়ে কাজ করেছি। ২০২১ সালে পুরভোট হয়। আবার পুরবোর্ড হয়। ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি আবার আমাকে অর্ডার ইস্যু করে জানান হেল্থ অ্যাডভাইজার হিসাবে কাজ করব। কর্পোরেশনে কাউন্সিলর ক্লাবে একদম কোণের একটা ঘরও আমাকে দেওয়া হয় সেখানে বসে কাজ করতাম। বাইরে বোর্ডও লাগানো হয়েছিল। আমি এখনও আমাকে এ নিয়ে অফিশিয়ালি কেউ কিছু বলেনি।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, কেন মেয়র বললেন এরকম কোনও পদ ছিল না, সেটা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না।