আরজি করের মহিলা চিকিত্সক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তোলপাড় সব মহল। কর্মবিরতিতে জুনিয়র চিকিত্সকরা। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্ত গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। আগেই নির্যাতিতার হাড় ভাঙার কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে দাবি করেছিল তদন্তকারীরা। তবে এবার অটোপ্সি রিপোর্টে এল একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুসারে, গোটা শরীরে আঘাত, মিলেছে ধস্তাধস্তির প্রমাণ। কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রেনি ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। এমনকী তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শুধু শারীরিক আঘাতই নয় ভয়ংকর যৌন নির্যাতন এবং ফোর্সফুল পেনিট্রেশনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। নির্যাতিতার মাথা, মুখ, ঘাড়, হাত এবং যৌনাঙ্গে ১৪ টিরও বেশি গভীর ক্ষতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
খুনের কারণ হিসাবে জোর করে শ্বাসরোধের কথাও বলা হয়েছে অটোপ্সি রিপোর্টে। গলা টিপে শ্বাসরোধ করে আঘাত করা হয়েছে। শুধু গলা টিপে ধরাই নয়, মুখও চেপে ধরার প্রমাণও মিলেছে পিএম রিপোর্টে। ময়নাতদন্তের যা রিপোর্ট তাতে মৃত্যুর আগে অসচেতন অবস্থায় ধর্ষণের ইঙ্গিত মিলছে। এছাড়া, নির্যাতিতার সারা দেহে একাধিক নখের আঁচড়, যৌন কামড় (লাভ বাইট)-এর চিহ্নও পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চিকিৎসকরা বলেছেন, ‘তরুণীর যৌনাঙ্গে জোর করে পুরুষাঙ্গ প্রবেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানসম্মত নথি মিলেছে, যা যৌন নিপীড়নের ইঙ্গিতবাহী।’ এমনকী খুনের পদ্ধতি হোমিসাইড। যৌন নিপীড়ন তো বটেই, যোনিতে ক্ষতের প্রমাণও বীভত্স। যৌনাঙ্গে সাদা, পুরু, চটচটে তরলও পাওয়া গিয়েছে। রিপোর্টে ফুসফুসে রক্তক্ষরণ এবং শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার স্পষ্ট উল্লেখ আছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর শরীরে মোট ২৪টি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রিপোর্ট বলছে তাঁর গলার হাড় ভাঙা। অর্থাৎ থাইরয়েড কার্টিলেজ, হাইওয়েড বোন ভাঙা ছিল। হাড়েও ছিল রক্তপাতের চিহ্ন। এদিকে রক্ত এবং অন্যান্য শারীরিক তরলের নমুনা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ডিউটির করছিলেন তিনি। এরপরই আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয় ওই মহিলা চিকিত্সক-পড়ুয়ার দেহ। আরজি কর কাণ্ডে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মিলেছে হাড়হিম করা যৌন নির্যাতনের প্রমাণ। সেমিনার হলে অর্ধনগ্ন দেহের পাশ থেকেই উদ্ধার হয় পোশাক, ল্যাপটপ ও ব্যাগ। দেহের পাশে মেলে ভাঙা চশমাও।