আপাতত স্থগিত অধিবেশন, ২৩ তারিখ একদিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকের ডাক সিপিএমের

লোকসভা নির্বাচনের ভরাডুবির পর সংগঠনের পুনর্গঠনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল সিপিএম। সেই কারণে নদিয়ার কল্যাণীতে রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন ডেকেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। লোকসভা নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে আসার পর জেলা এবং গণসংগঠনের নেতৃত্ব এই অধিবেশনে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার কথা ছিল। একইসঙ্গে আগামী দিনে নতুনভাবে সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কি রণকৌশল নেওয়া যায়, তা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎই আরজিকর কাণ্ডে আন্দোলন শুরু হয়। আর এই আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক ফসল তোলার জন্য দলের সবকটি সংগঠনকেই রাস্তায় নামিয়েছে দল। এমন অবস্থায় তিন দিনের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে নেতৃত্বকে ব্যস্ত না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। সোমবার রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আপাতত স্থগিত রাখা হবে অধিবেশন। তার বদলে ২৩ তারিখ একদিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক করা হবে বলে দলীয় সূত্রে খবর। রাস্তায় থেকেই এই আন্দোলনের রাজনৈতিক ফসল ঘরে তোলার চেষ্টা সিপিএম  করবে। বর্ধিত বৈঠক তাই স্থগিত রাখা হলো।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, ‘২২ তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণ-সভাও হবে। তারপর টানা তিন দিন বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠক। এতগুলো দিন নেতৃত্বকে আটকে রাখা ঠিক হবে না। কারণ আরজিকর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে যে কোনও পরিস্থিতির জন্য এখন আমাদের তৈরি থাকতে হচ্ছে। কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যজুড়েই এই আন্দোলন চলছে। এমতাবস্থায় কল্যাণীতে তিন দিনের বৈঠক চালিয়ে যাওয়া উপযুক্ত হবে না। আন্দোলনের রাস্তায় থাকতে হবে। যাঁরা প্রতিবাদ, আন্দোলন করতে গিয়ে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং আইনি সহায়তা দেওয়ার কাজও করতে হবে।’

সিপিএম সূত্রের খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ওই বর্ধিত অধিবেশন আপাতত হবে না। তার পরিবর্তে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ২৩ তারিখ এক দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক বসবে। এদিকে আলিমুদ্দিন স্টিটও মনে করে আরজিকর কাণ্ডে আন্দোলনের প্রথম থেকেই চালকের আসনে থেকেছে দলের ছাত্র যুব ও মহিলা সংগঠন। ঘটনার পর পরেই হাসপাতালের উল্টোদিকে কার্যত স্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে দিনের পর দিন সেখানে কর্মসূচি নিয়েছে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, দেবাঞ্জন দে, কনীনিকা বোস ঘোষরা। বিভিন্ন অভিযোগে যুব মহিলা সংগঠনের নেতৃত্বের সাতজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করেছে পুলিশ। পাল্টা কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএমও। আর সেই আন্দোলনকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে কর্মসূচি ছড়িয়ে দিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। গণসংগঠনের পাশাপাশি সিপিএমের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে কর্মসূচি। গত শনিবার সিপিএম সহ বাম নেতাদের পাশাপাশি কংগ্রেসকেও যুক্ত করে রাসবিহারী থেকে অ্যাকাডেমি পর্যন্ত মিছিল করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + nineteen =