আরজি করের ঘটনা নিয়ে যখন উত্তাল সারা দেশ ঠিক তখনই এক জঘন্য ঘটনা ঘটল নয়ডার ৯৪ নম্বর সেক্টরে। এখানকার এক লাশকাটা ঘরে সঙ্গমে লিপ্ত হতে দেখা গেল এক পুরুষ ও এক মহিলাকে। ভিডিয়োতে এক তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতিও টের পাওয়া যাচ্ছে। ওই ব্যক্তি, ওই পুরুষ ও মহিলার জঘন্য কাজকর্মের ভিডিয়ো রেকর্ড করেছেন। এই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন নেটিজেনরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি প্রায় ২ মিনিট ২১ সেকেন্ডের। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি একটি মোবাইল ফোন ক্যামেরা চালু করে ওই লাশকাটা ঘরের ভিতরে যাচ্ছেন। ভিতরে, এক মহিলা ও পুরুষকে দেখা যায় ঘনিষ্ঠ হতে। জানা গিয়েছে, ওই পুরুষ লাশকাটা ঘরটির সাফাই কর্মী। তাদের ভিডিয়ো তৈরি হচ্ছে দেখেও কোনও গোপনীয়তা অবলম্বন করার চেষ্টা দেখা যায়নি ওই মহিলা ও সাফাই কর্মীর মধ্যে। বরং ভিডিয়োটি যিনি রেকর্ড করছেন, তাঁর কাছে তারা একটি চাদর চায়।
এরপর, ওই ব্যক্তি অন্য একটি ঘরে যান। সেখান থেকে একটি সাদা রঙের চাদর বের করে এনে তাদের দেয়। মহিলা ও পুরুষ সাফাই কর্মীকে দেখা যায় অন্তরঙ্গ হতে। কিছুক্ষণের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন ভিডিয়ো করা ব্যক্তিটি। ফিরে এলে সাফাই কর্মী ও ওই মহিলাকে প্রকাশ্যেই অত্যন্ত আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়। ভিডিয়ো রেকর্ড করা ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাদের কিছু কথাও বলতে দেখা যায়। ওই মহিলা সম্ভবত ভিডিয়ো রেকর্ডের বিষয়ে আপত্তি জানান। তবে, ওইটুকুই। এরপর পুরুষ এবং মহিলা দুজনে ফের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। কোনোরকম রাখঢাক ছাড়াই। এমনকি, ধীরে ধীরে মহিলাকে বিবস্ত্রও করতে থাকে ওই সাফাই কর্মী। সবটাই ভিডিয়ো ক্যামেরার সামনে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই লাশকাটা ঘরের একটি কক্ষে একটি ডিপ ফ্রিজার রাখা আছে। যেখানে সারা জেলা থেকে আসা লাশগুলি নিরাপদে রাখা হয় এবং তাদের ময়নাতদন্ত করা হয়। সেই ঘরেই এই জঘন্য ভিডিয়োটি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে, এটি কবেকার ঘটনা, তা স্পষ্ট নয়। এদিকে এই ভিডিয়োর সত্যতাও যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে ভিডিয়োটি। তবে সব মিলিয়ে প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্ম। পুরুষটি ওই লাশকাটা ঘরের সাফাইকর্মী বলে জানা গেলেও, মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। তিনি বহিরাগত বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। নেটিজেনরা জানিয়েছেন, এইভাবে লাশকাটা ঘরে যদি বাইরের কোনও মহিলা ঢুকে পড়তে পারেন, সেই ক্ষেত্রে লাশ নিয়েও কারচুপি হতে পারে। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে অনেক ধরনের প্রমাণও নষ্ট করা যেতে পারে।
এই বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জেলার চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুনীল শর্মা। তিনি জানিয়েছেন, ভিডিয়োতে যে সাফাই কর্মীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি এর আগে ডানকাউর হাসপাতালে ছিলেন। কিছুদিন আগে তাঁকে ওই লাশাকাটা ঘরে মোতায়েন করা হয়েছিল। এই ঘটনার বিষয়ে বিভাগীয় তদন্তর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএমও। ওই সাফাই কর্মীকে জেরা করা হবে। অপর দুই ব্যক্তি কারা, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। সিএমও জানিয়েছেন, সাফাই কর্মীর পাশাপাশি, ওই মহিলা এবং ভিডিয়োটি যিনি রেকর্ড করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নয়ডা পুলিশ বলেছে, এই ঘটনার বিষয়ে ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।