কর্মক্ষেত্রে এক ধোঁয়াশার মাঝে সন্দীপ ঘোষের বর্তমান অস্তিত্ব

আপাতত ছুটিতে আছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। স্বাস্থ্য ভবন বলছে, আপাতত কোনও পদে নেই তিনি। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে কোনও পদ ছাড়া কোনও সরকারি কর্মী থাকতে পারেন কি না তা নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে, এমন আদৌ করা সম্ভব কি না তা নিয়েও।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের প্রাক্তন অধিকর্তারা জানাচ্ছেন, স্বাস্থ্য ভবনের সিদ্ধান্তে রয়েছে ধোঁয়াশা। প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্তাদের অধিকাংশেরই মতে সরকার কি নিজের নিয়ম নিজেই মানছেন না। প্রশ্ন তুলছেন, এসব কীভাবে হচ্ছে তা নিয়েও।

প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোনও পদে নেই এর অর্থ হল, ‘ঝুলে আছেন, কোনও অস্তিত্বই নেই।’ এর মধ্যে কোনওটাই স্বাভাবিক ঘটনা নয় বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, সরকারি কর্মীকে কোনও না কোনও একটা পোস্টিং দিতেই হবে। হতে পারে অধ্যক্ষ বা ওএসডি। একমাত্র সাসপেন্ড হলে তবেই এমন স্টেটাস ছাড়া থাকা যায় বলে জানান তিনি।

সরকারি নিয়ম-নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যাকে তাকে, যখন খুশি বসিয়ে দিলাম, সরকারি চাকরিতে এ সব হয় না। সার্ভিস রুল আছে। সরকার নিজেই যদি নিজের রুল ভাঙে, তাহলে কিছু বলার নেই।’

একই প্রশ্ন তুলেছেন আর এক প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রও। তাঁর প্রশ্ন, ‘সন্দীপ ঘোষের পদটা কী, তা আমরা জানি না। স্টেটাসটা কী, সেটা কেউ জানে না। কোন পোস্টে থেকে ছুটি নিলেন তিনি?’ সঙ্গে এও জানান, সিএল বা ইএল-এর মতো কোনও সাধারণ ছুটি সন্দীপ ঘোষ নেননি। তিনি পেয়েছেন  ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ’ বা ইওএল। প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রের দাবি, এই ছুটির জন্য আবেদন জানাতে হয়। সরকার এভাবে ছুটি দিয়ে দিতে পারে না। আর আর্ন লিভ থাকা সত্ত্বেও কেন সন্দীপ ঘোষকে ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ’ দেওয়া হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। কোন কারণে এই ছুটি, সেটাও প্রকাশ্যে আসেনি।

উল্লেখ্য, সাধারণত এই ছুটি নেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকলে ফিরে আসার পর এই ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ’-এর জন্য আবেদন করতে হয়। আবেদন করার পর ফাইল তৈরি করা হয়, তারপর তাতে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ভিজিল্যান্স ক্লিয়ার হওয়ার পর পাওয়া যায় ছুটি।

এই প্রসঙ্গে সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘কেউ বলল ছুটি দিন, আর অনুমোদন দিয়ে দিলাম। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার নয়। সরকার যা খুশি করতে পারে না।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + eighteen =