মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার। হাওড়া ও সাঁতরাগাছিতে আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করতেই লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। পুলিশের এই ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ নিন্দা করে সরব হলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। একইসঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে তিনি আক্রমণ করে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘যেসব সাধারণ মানুষ গণতান্ত্রিক নীতিকে মূল্য দেন, কলকাতায় পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতার এই ছবি তাঁদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।’ একইসঙ্গে রাজ্যের শাসকদলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘দিদির বাংলায় ধর্ষক ও অপরাধীদের সাহায্য করলে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু, মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে আওয়াজ তুললে তা অপরাধ।’
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে এক জুনিয়র ডাক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ‘তিলোত্তমা’-র নৃশংস পরিণতির প্রতিবাদে ‘রাত দখল’ করেন মহিলারা। দোষীদের ফাঁসির সাজা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিকে, শাসকদল তৃণমূলকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে বিরোধীরা। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিবিআই।
মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে নবান্নে অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। কিন্তু, তাদের এই অভিযান ঘিরে সোমবার থেকেই চাপানউতোর শুরু হয়। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এই আন্দোলনের পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন। কলকাতা পুলিশও সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করে, অভিযানের নামে গোলমাল বাধানোর চেষ্টা করা হতে পারে। মঙ্গলবার সেই অভিযান আটকাতে নবান্ন চত্বরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। হাওড়া ও সাঁতরাগাছিতে ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলনকারীরা এগোনোর চেষ্টা করতেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাঁরা শান্তিপূর্ণ অভিযান করছিলেন। পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। অন্যদিকে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
এদিকে নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ কেন শান্তিপূর্ণ, নিরস্ত্র মানুষের উপর লাঠিচার্জ করল তা নিয়ে। সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, কেন মহিলাদের মারা হল তা নিয়েও। পাশাপাশি এ অভিযোগও করেন, কেমিক্যাল মেশানো জল দিয়ে স্প্রে করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি এ অভিযোগও করেন, ‘বাংলায় জন্ম নিয়ে কি ছাত্র- ছাত্রীরা অপরাধ করেছে? পুলিশ মদ্যপ অবস্থায় এক মহিলার মাথায় লাঠির আঘাত করছে।’