শনিবার যুবভারতী দখল নিল পাহাড়িরাই

২-০ এগিয়ে থেকেও নির্ধারিত সময়ে জেতা হল না মোহনবাগানের। ম্যাচ গড়াল সেই টাইব্রেকারেই। তবে সত্যি কথা বলতে শুরুর ১০ মিনিট ও বিরতির আগের স্রেফ কয়েক মুহূর্তই মোহনবাগানকে খুঁজে পাওয়া গেল ডুরান্ড ফাইনালে। বাকি পুরোটাই শুধু একতরফা নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র দাপট। গত দু-ম্যাচের মতো ফাইনালেও মোহনবাগানের ভরসা ছিল বিশাল কাইথেতা কাজে এল না ফাইনালে। টাইব্রেকারে খেলা গড়ালেও জয়ের হ্যাটট্রিক হল না। টাইব্রেকারে অনবদ্য জয় পেল নর্থ ইস্ট। আর এই জয়ের জেরে মোহনবাগানের ১৮ নম্বর ট্রফি মোহনবাগান তাঁবুতে গেল না।  প্রথম বার ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি ১০ বছরের ক্লাব জিতল তাদের ইতিহাসে প্রথম ট্রফি।

শনিবার যুবভারতীতে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের দেখে একবারও মনে হয়নি যে, তারা খেতাব ধরে রাখতে মাঠে নেমেছিল। হোসে মোলিনার শিষ্যরা যেন জুয়ান পেড্রোকে ট্রফি তুলে দেওয়ার জন্যই খেললেন। ম্যাচের ১১ মিনিটের মধ্যেই ১-০ এগিয়ে যায় মোহনবাগান। বক্সের মধ্যে সাহাল আব্দুল সামাদকে ফাউল করেন আশির আখতার। জার্সি ধরে টানেন। রেফারি দেরি করেননি ফাউল ও পেনাল্টি দিতে। পেনাল্টি থেকে মোহনবাগানকে ১-০ এগিয়ে দেন জেসন কামিংস। ১৯ মিনিটে লিড ২-০ করার সুযোগ ছিল মোহনবাগানের সামনে। বক্সের ভিতরে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট। বাঁ পায়ের শট। সামনে শুধুই গোলকিপার। যদিও সেখান থেকে শট মারলেন ক্রসবারের উপর দিয়ে! কোচ হোসে মোলিনা সহ সকলেরই মাথায় হাত।

প্রথমার্ধের অ্যাডেড টাইমে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে দেন সাহাল আব্দুল সামাদ। বাঁ দিক বল নিয়ে উঠছিলেন লিস্টন কোলাসো। পোস্টের সামনে থেকে মাইনাস করেন। ওয়ান টাচ ভলিতে গোল সাহাল আব্দুল সামাদের। প্রথমার্ধেই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ২-০ এগিয়ে যাওয়ায় ১৮ নম্বর ট্রফির স্বপ্ন উজ্জ্বল হতে শুরু করে সবুজ মেরুন শিবিরে।

মোহনবাগান সমর্থকরাও যখন ভাবছেন ব্যাক-টু-ব্যাক ট্রফি শুধু সময়ের অপেক্ষা, তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি যে দ্বিতীয়ার্ধে পাহাড়ি দল এমন প্রত্যাঘাত করতে পারে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই পুরো ফিফথ গিয়ারে ছুটতে থাকে নর্থ ইস্ট। আক্রমণের ডানায় ভর করে তিন মিনিটে দুই গোল করে, নর্থ ইস্ট মোহন সমর্থকদের মুখের হাসি কেড়ে নেয়। ৫৫ মিনিটের মাথায় আজারাই গোল করে ব্যবধান কমান। ৫৮ মিনিটে দুর্দান্ত একটি গোল করেন গিলেরমো। আর তাতেই ২-২ সমতা ফেরায় নর্থ ইস্ট। আরও একটি গোল করতে পারত নর্থ ইস্ট, সেই বিশাল কাইথ বাঁচিয়ে দেন। এরপর ফাইনাল গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে প্রথম কিক ‘মিস’ মোহনবাগানের জেসন কামিংসের। গোলকিপার আগেই জায়গা ছাড়ায় রি-টেকের সুযোগ কামিংসের। আর ভুল করেননি বিশ্বকাপার কামিন্স। তৃতীয় স্পটকিকে লিস্টন কোলাসোর কিক বাঁচিয়ে দেন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড গোলকিপার গুরমিত। মোহনবাগানের অস্বস্তি বাড়ে। পার্থিবের কিকে হাত ছোঁয়ালেও আটকাতে ব্যর্থ বিশাল কাইথ। ফলে অ্যাডভান্টেজ ছিল নর্থ ইস্টই। শুভাশিসের কিকও বাঁচিয়ে দেন গুরমিত। আর এই সেভেই চ্যাম্পিয়ন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। ৪-৩ ব্যবধানে জয়ী নর্থ ইস্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 9 =