কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির দেওয়া ডিএনএ রিপোর্টের ভিত্তিতে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয় সিবিআই। গত ১৩ অগাস্ট সিএফএসএল কলকাতায় কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ডিএনএ রিপোর্টের জন্য নমুনা জমা দেওয়া হয়। নমুনার মধ্যে তিলোত্তমার দেহ থেকে উদ্ধার ভ্যাজাইনাল সোয়াব, নখে আটকে থাকা ত্বক এবং চুলের নমুনা, অকুস্থলে পাওয়া চুলের নমুনা জমা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তিলোত্তমার পোশাক, কম্বল, চাদর নমুনা হিসেবেও জমা পড়ে।
নমুনা হিসেবে জমা পড়ে প্রধান অভিযুক্ত অর্থাৎ ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের রক্তের নমুনা এবং তার ওই রাতে পড়ে থাকা পোশাক। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে রিকুইজিশন দিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক। প্রাথমিক ভাবে রিপোর্ট তৈরির জন্য ১০ দিন সময় চেয়েছিল সিএফএসএল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কলকাতা পুলিশের অনুরোধে ৬ দিনে রিপোর্ট দিতে রাজি হয় সিএফএসএল। কিন্তু ওই দিনই আবার আদালতের নির্দেশে তদন্তভার চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে। তাহলে কোন তদন্তকারি সংস্থার হাতে রিপোর্ট হস্তান্তর করবে সিএফএসএল, তা নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা।
কলকাতা পুলিশের কাছে তদন্তভার না থাকায়, তারা সিএফএসএল-কে যোগাযোগ না করায় রিপোর্ট থেকে যায় সিএফএসএল কর্তৃপক্ষের কাছে। শেষ পর্যন্ত ২৬ অগাস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে সিবিআই সংগ্রহ করে ডিএনএ রিপোর্ট। সিবিআইয়ের তরফ থেকে এই রিপোর্ট নিয়ে প্রথম থেকেই কোনও মুখ খোলেনি।
এদিকে সূত্রের খবর, সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার পর, তারাও কিছু নমুনা জমা দিয়েছে সিএফএসএল-কে। সেই নমুনার রিপোর্ট এখনও তৈরি হয়নি। এদিকে কলকাতা পুলিশের জমা দেওয়া নমুনার ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্টে উল্লেখ, তিলোত্তমার ভ্যাজাইনাল সোয়াবের এর সঙ্গে ধৃতের ডিএনএ ম্যাচ করেছে। ধৃতের শরীরের আঘাত থেকে সংগৃহীত নমুনার সঙ্গে তিলোত্তমার নখ থেকে প্রাপ্ত নমুনাও মিলেছে। অকুস্থলে পাওয়া চুলের সঙ্গে মিলেছে ধৃতের ডিএনএ। তিলোত্তমার লালা রসের নমুনাতেও ধৃতের ডিএনএ-র অস্তিত্ব মিলেছে। তবে সিএফএসএলএ-এর এই রিপোর্টে দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তির অস্তিত্বর উল্লেখ নেই। এই রিপোর্ট পর্যালোচনার জন্য এইমস-এ এর বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, সিবিআই যে নমুনা পাঠিয়েছে, সেই নমুনার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিতে রাজি নয় সিবিআই। সেই রিপোর্ট এলে, সিবিআই পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের সঙ্গে মিলিয়ে, পরবর্তী পদক্ষেপ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালতের শুনানির আগেই সেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার কথা সিবিআইয়ের। এই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই রহস্যের কিনারা হতে পারে বলে ধারনা সিবিআই আধিকারিকদের।