আরজি কর ঘটনায় লাল জামার উপস্থিতি নিয়ে চড়েছিল রহস্যের পারদ। এবার শুরু বেগুনি জামা পরিহিত এক ব্যক্তিকে নিয়ে নতুন চর্চা। শুধু তাই নয়, কলকাতা পুলিশের দেওয়া ছবি ও আন্দোলনকারী ডাক্তারদের দেওয়া ছবি নিয়েই পাকাচ্ছে নতুন জট। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে দুই ছবি এক। তবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি, কলকাতা পুলিশের ছবিটি আসলে ক্রপ করা অর্থাৎ মূল ছবি থেকে কিছুটা কেটে বাদ দিয়ে সামনে আনা হয়েছে। আন্দোলনকারী ডাক্তারদের দেওয়া ছবিতে নীল শার্ট পরা এক ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু, কলকাতা পুলিশের ছবিতে বাকি সব এক থাকলেও নীল শার্ট পরা ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, কেন ওই ব্যক্তিকে বাদ দিতে হল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। যাঁকে বাদ দেওয়া হল তিনি কে সে প্রশ্নও তুলছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি তাঁরা এও জানাচ্ছেন, পুলিশ অকুস্থলের পুরো ছবি দেখায়নি। এই প্রসঙ্গে অবশ্য আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা জানান, ‘মিথ্যাকে যত ঢাকতে যাওয়া হয় তত নতুন করে মিথ্যা বেরিয়ে পড়ে। কলকাতা পুলিশ মিডিয়ার দেখানো ছবির পিছনে দৌড়াচ্ছে কেন? কারণ তার নিজের মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করছে। সেটা করতে গিয়ে ছবিকে ক্রপ করে দেখানো হচ্ছে। তাতে আরও মিথ্যা ধরা পড়ে যাচ্ছে।’ এখানে না থেমে তাঁদের বক্তব্য, ‘ওখানে একজনের কাটা হাত ছাড়া শরীরের বাকি অংশ দেখা যাচ্ছে না। ওই হাইলি সাসপিয়াস ব্যাপার। ওটা বিরূপাক্ষ বিশ্বাস হওয়ার খুব সম্ভাবনা রয়েছে। সামনে অভীদ দে কে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু পুলিশ এই চিহ্নিত ক্রিমিনালদের আড়াল করতে চাইছে।’ যদিও পুলিশ আবার ইতিমধ্যেই দাবি করেছে তাঁরা যখন ওই জায়গায় তদন্ত করছিলেন সেখানে কোনও বাইরের লোক ছিল না। বাইরের লোক থাকা অসম্ভব বলেই দাবি করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে। তাহলে বেগুনি জামা পরা ব্যক্তিও কী তদন্ত করছিলেন নাকি তিনি বিরূপাক্ষ বিশ্বাস তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠেছে, যদি তিনিই হন তাহলে প্রশ্ন, তিনি ওখানে কী করছিলেন তা নিয়েও। প্রসঙ্গত, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস বর্ধমান মেডিকেল কলেজের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক। তিনি হঠাৎ আরজি করে কী করছিলেন সে প্রশ্নও তুলছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা।
সার্ভিস ডক্টর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস এই প্রসঙ্গে জানান, ‘আমরা দেখলাম প্রচুর বাইরের লোক ওখানে ঢুকে গিয়েছিল। যে ছবি ভাইরাল হয়েছে তাতে অনেককে দেখা যাচ্ছে। অথচ পুলিশ যে ছবি দেখাচ্ছেন তাতে বেশ কয়েকজনের ছবি কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তাঁদের আড়াল করা হচ্ছে। যাঁরা তথ্য লোপাটের জন্য ওখানে গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে কেউ হতে পারেন।’ এই ছবি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবি করেছেন তিনি। যারা যারা ওখানে ছিল তাঁদের সকলকে তদন্তের আওতায় আনা উচিত বলেও মনে করছেন তিনি।
যদিও বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের দাবি, ‘তিনি রাজনৈতিক যড়যন্ত্রের শিকার। তিনি ছিলেন না। আমি সেমিনার রুম কোথায় সেটাই জানতাম না। পরে সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানতে পেরেছি। সেদিন আমি গিয়েছিলাম ২টো থেকে ৩টের মধ্যে। ছিলাম একদমই বাইরে। পুলিশ কর্ডন করা এরিয়াতে কী কেউ ঢুকতে পারে? আমি মানসিক ভারসাম্যহীন নই। আমি জানি কোনটা কী করতে হবে।’