আদালত চত্বরে চড়, ৮ দিনের সিবিআই হেফাজত সন্দীপের

আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ৮ দিন সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এরপর মঙ্গলবার সন্দীপকে আদালতে পেশ করে ১৪ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় সিবিআই। সিবিআইয়ের তরফ থেকে এদিন শুনানিতে আদালতে আর্জি জানানো হয়, দশ দিনের হেফাজতের। সিবিআইয়ের তরফ থেকে এও বলা হয়, মুখোমুখি জেরার প্রয়োজন। এই কেস প্রমাণের জন্য হেফাজতে দরকার। তথ্য প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পিসি প্রয়োজন। চারজন রয়েছেন হেফাজতে। অপরাধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। জেরা করলে আরও অপরাধ সামনে আসবে। ডিজিটাল এভিডেন্টস আসবে সামনে।  সব অভিযোগ খুবই গুরুতর। এটা হাইকোর্টের আদেশের ভিত্তিতে তদন্ত। এটা আর্থিক দুর্নীতি। তবে আদালত শেষপর্যন্ত ৮ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তবে লক্ষণীয় ঘটনা হল বিচারক সুজিত কুমার ঝা-এর কাছে সন্দীপ ঘোষের জামিন প্রার্থনা করেননি তাঁর আইনজীবী।

সন্দীপ ঘোষ ও বাকী তিনজনের তরফে জামিনের আবেদন করা হয়। কিন্তু সওয়াল জবাব শেষে সন্দীপ ঘোষের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক। আজ যখন অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করা হয় তখন দেখা যায় মহিলা আইনজীবীরা তেড়ে যান অভিযুক্তদের দিকে। তাদের লক্ষ্য করে ক্রমাগত স্লোগান দেওয়া হয়।

সিবিআইয়ের তরফে বলা হয় তারা সন্দীপ ঘোষকে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চান। কারণ তাঁকে জেরা অনেক গোপন তথ্য উঠে আসবে। অভিযুক্তদের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িয়ে রয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই ৪ জনকে যদি জেরা করা যায় তাহলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। আরও অনেককে গ্রেফতার করা যাবে। কারণ অপরাধের পরিধি অনেকটাই বড়। সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী বলেন সবসময় তারা সিবিআইকে সহযোগিতা করে গিয়েছেন। প্রত্যেক দিনই সন্দীপ ঘোষ সিবিআই দফতরে যেতেন। তাদের সহযোগিতা করে গিয়েছেন। ভবিষ্যতেও করবেন। ওই সওয়াল জবাব শোনার পর সন্দীপ ঘোষ ও বাকী ৩ জনকে  ৮ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।

সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট পাচার। পাশাপাশি আরজি করের মর্গে পড়ে থাকা সনাক্ত হয়নি এমন বডি পাচারের অভিযোগও রয়েছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে।

এদিন নিজাম প্যালেস থেকে বের করে সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে যাওয়া হয় আলিপুর আদালতে। নিজাম প্যালেস থেকে বের হতেই তাঁকে লক্ষ্য করে চোর চোর স্লোগান দেয় জনতা। আলিপুর আদালতে গিয়েও তাকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। আর এই সময় মহিলা ও পুরুষ আইনজীবীরাও বিক্ষোভ দেখান। সন্দীপ ঘোষের ফাঁসির দাবিতে সরব হন তাঁরা। এদিকে আবার সেইসময় আদালত চত্বরে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কম ছিল। এরই মাঝে আরজি করের সেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে এবার সপাটে চড় মারেন এক বিক্ষোভকারী। উত্তেজনার পারদ এতটাই চড়ে যে সন্দীপ ঘোষকে আদালতে ঢোকাতে বেগ পেতে হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। এই বিক্ষোভের মাঝে কোনওরকমে তাঁকে আদালতে ঢুকিয়ে কার্যত হাফছেড়ে বাঁচে পুলিশ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =