সিপির কাছে ৫ দফা দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের

‘পুলিশি ব্যর্থতা মেনে নিলেন কলকাতা পুলিশের  সিপি বিনীত গোয়েল। ১২ ও ১৪ তারিখের ঘটনা তিনি স্বীকার করেছেন।’ লালবাজারে ডেপুটেশন জমা দিয়ে বেরিয়ে এসে এমনটাই জানায় আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল। একইসঙ্গে তাঁরা জানান, আপাতত লালবাজার থেকে উঠছে ডাক্তারদের অবস্থান। তবে একইসঙ্গে তাঁরা এও জানান, এখন অবস্থান উঠলেও আন্দোলন চলবে। পাশাপাশি তাঁদের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ‘সিপি-র পদত্যাগ চেয়ে আমরা ডেপুটেশন দিয়েছি। আমরা সিপি-র কাছে ৫ দফা দাবি জানিয়েছি। যার সিপি-র কাছে কোনও সদর্থক উত্তর মেলেনি। বিনীত গোয়েলের সামনেই ডেপুটেশন পড়া হয়। এরপর আমরা বিস্তারিত ভাবে পয়েন্ট অনুযায়ী আলোচনা করি।’ এদিকে সূত্রে খবর, এদিন পুলিশ কমিশনারের সামনেই ওই ডেপুটেশন পড়ার পর প্রশ্ন করা হয়, পদত্যাগ নিয়ে তিনি কী ভাবছেন। প্রত্যুত্তরে বিনীত গোয়েল জানান, তিনি তাঁর কাজে সন্তুষ্ট। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, তাঁর কাছে যদি নির্দেশ আসে তিনি পদত্যাগ করবেন।

এখানেই শেষ নয়, তাঁর পুলিশ কমিশনারকে নীল-সবুজ চাদর বদলে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তবে সিপি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলেই জানা গেছে। এছাড়াও লাল জামা পরিহিত ব্যক্তি ক্রাইম স্পটে কী করছেন তার উত্তরও সিপি দিতে পারেননি। বিনীত গোয়েল চিকিৎসকদের বলেন, ‘আমি জানি না, চিনি না এদের। কে ডাক্তার আর কে ডাক্তার নয় তা জানি না।’ পাল্টা প্রতিনিধি দলের তরফ থেকে বলা হয়, ‘ঘটনার অকুস্থলে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব আপনার ছিল। এই সব নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’

আন্দোলনরত পড়ুয়ারা এই প্রসঙ্গে এও জানান, ‘যেহেতু সিপি সদুত্তর দিতে পারেননি, তাই আমাদের আন্দোলন যেমন চলছিল তেমনই চলবে। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চলবে। এর মধ্যে তৃতীয় যে দাবি, সিপির পদত্যাগ ! সেই দাবিও চলবে।‘

এদিকে সোমবার রাতভর জেগে টানা ২২ ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার দুপুরে ব্যারিকেড খুলে দেয় পুলিশ। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলকে লালবাজারে গিয়ে দেখা করার অনুমতি দেয় পুলিশ। এরপরই জুনিয়র ডাক্তারদের ২২ জনের প্রতিনিধি দল লালবাজারে যায়। লালবাজারে সিপি-জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হয়। সিপি-র পদত্যাগ চেয়ে সিপি-র কাছেই দরবার করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।  প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্যভবনের পর সোমবার লালবাজার অভিযান। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট পথে নামে।  প্রতীকী মেরুদণ্ড আর গোলাপ নিয়ে মিছিল শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দুপুর ২টো থেকে শুরু হয় সেই মিছিল। মিছিলের জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট। বউবাজারেও ছিল বজ্র আঁটুনি। মিছিল রুখতে লাঠি-ঢাল, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে প্রস্তুত ছিল পুলিস। ফিয়ার্স লেনে দেখা যায় ৯ ফুটের উঁচু ব্যারিকেডও। লালবাজার কার্যত দুর্গের রূপ নেয়। তবে লালবাজার পৌঁছানোর অনেক আগেই বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই অবস্থানে বসে পড়েন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 13 =