শহরের নানা প্রান্তে নানা দিকে দিনভর হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরতে দেখা গেল টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। দশ ঘণ্টা ধরে প্রায় আটটি হাসপাতালে ঘুরলেও ভর্তি হননি বা ভর্তি হতে পারেননি কোথাও। দমদম থেকে সল্টলেক, আলিপুর, দক্ষিণ কলকাতা, এমনকী ইএম বাইপাসের একাধিক হাসপাতালে ঘুরেছেন বলে খবর। সূত্রে খবর, সকাল ১০টা ৪০ থেকে ঘুরেছেন রাত ৯টা পর্যন্ত। বলছেন বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে, কিন্তু কোথাও ভর্তি হননি। কারণ, নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলেও তাতে কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি।
হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সূত্রে খবর, এদিন তিনি হাসপাতালে গিয়েই বলে বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে। তিনি ভর্তি হতে চান। তারপরেই দ্রুত তাঁর পরীক্ষা হয়। কিন্তু, যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায় রিপোর্ট সবই নরম্যাল। চিকিৎসকেরা তাঁকে সে কথাও জানান। কোনও উদ্বেগের কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। সে কারণে কাউন্সিলিংয়ের পরামর্শও দেওয়া হয় তাঁকে।
ইতিমধ্যেই দুটি নামী বেসরকারি হাসপাতালের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে পালস- ৬৭, বিপি ১৪০/৮০, প্রশ্বাস মাত্রা ২০ প্রতি মিনিটি, অক্সিজেনের মাত্রা ৯৮ শতাংশ, ব্লাড সুগার ৯০। ব্রেনের সিটি স্ক্যান নরম্যাল। অ্য়াবডোমেন ইউএসজি রিপোর্ট সফট। চেস্ট রিপোর্ট নরম্যাল। জিসিএস ১৫। কার্ডিও ভাসক্যুলার সিস্টেম পরীক্ষায় সাউন্ড ও বাকি সব কিছু নরম্যাল। পাশাপাশি একটি হাসপাতালের পরীক্ষার রিপোর্ট লেখা রয়েছে, ‘ক্যোয়ারি ক্যোয়ারি প্যানিক অ্য়াটাক উইথ মাইল্ড ডিহাইড্রেশন’। প্রতি ৮ ঘণ্টা অন্তর ৫০০ মিলিলিটার নরম্যাল স্যালাইন নেওয়া যেতে পারে। যদিও শেষে লেখা, ‘রেফার টু হায়ার সেন্টার উইথ হাই সেট আপ।’
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা। প্রশ্ন উঠেছে টালা থানার ভূমিকা নিয়েও। হাইকোর্টের নির্দেশে কেস চলে গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। এর আগে আরজি কর কাণ্ডে ইতিমধ্যেই টালা থানার ওসিকে তলব করেছিল সিবিআই। কেস ডায়েরি সহ তলবও করেছিলেন তদন্তকারীরা। এদিন তাঁর ইকো কাডিওগ্রাফি পরীক্ষাও করা হয় বলে খবর। সেই রিপোর্টও নরম্যাল বলে জানা যাচ্ছে। একাধিক হাসপাতালে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরাও দেখেছেন। তবে কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি। একটি হাসপাতাল রেস্ট এবং কাউন্সিলিংয়ের পরামর্শ দিয়েছে বলে খবর। তবে কয়েকটি হাসপাতাল তাঁকে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি কোনও সরকারি হাসপাতালে গিয়েছেন বলে জানা যায়নি।