আরজি কর দুর্নীতিতে সন্দীপের বাড়ি সহ একাধিক জায়গায় হানা ইডি-র

শুক্রবার সকাল থেকে ইডির হানা চলছে একাধিক জায়গায়। কলকাতা, হাওড়া, সোনারপুরের সুভাষগ্রাম, সল্টলেকে একসঙ্গে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়ির পাশাপাশি সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ একাধিক ভেন্ডার, ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয় বেল ইডি সূত্রে খবর। হাওড়ায় কৌশিক কোলে, বিপ্লব সিংহের বাড়ি, সুভাষগ্রামে প্রসূন চট্টোপাধ্য়ায়ের বাড়ি, হুগলির কুণাল রায়, সল্টলেকে ব্যবসায়ী স্বপন সাহার বাড়িতে এদিন হানা দেয় ইডি। এমনকী হুগলির চন্দননগর পাদ্রিপাড়ায় সন্দীপের শ্বশুরবাড়িতেও যায় ইডি। অর্থাৎ সন্দীপকে এবার ধীরে ধীরে ঘিরতে শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

এদিন ইডি যখন সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়িতে অভিযান চালায়, বাড়ির গেটের সামনে মুখ ঢেকে এসে দাঁড়ান সন্দীপ-পত্নী। তিনি দাবি করেন, ‘সবরকমভাবে সব তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করছি। সময়ে প্রকাশ পাবে। কাগজপত্রে কিস্যু পাওয়া যায়নি। পাওয়া যাবেও না। উনি কিছুই করেননি। সেটা আপনারাও জানতে পারবেন। সমস্ত মিথ্যা। প্রমাণ হওয়ার আগেই কাউকে ভিলেন বানিয়ে দেবেন না, এটা আমার রিকোয়েস্ট।’

আরজি করে একাধিক দুর্নীতির মামলায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের দিকে। এই মামলাতেই গ্রেফতারও হয়েছেন তিনি। এই দুর্নীতি মামলায় সিবিআই-তদন্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন সন্দীপ। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এদিনই আবার ইডির হানা সকাল থেকে।সন্দীপ ঘোষ ছাড়াও ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন দুই ভেন্ডার সুমন হাজরা ও বিপ্লব সিংহ। তাঁরা দু’জনই সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই আরও বেশ কিছু নাম উঠে আসে বলে খবর। মা তারা ট্রেডার্স কোম্পানির মালিক বিপ্লব সিংহের সাঁকরাইল হাটগাছার বাড়িতে এদিন যায় ইডি। স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে বিপ্লব ছবি আঁকতেন। ছাপাখানায় বিভিন্ন ছবি আঁকার কাজের পাশাপাশি ছোটদের ছবি আঁকা শেখাতেন। কিন্তু সাত আট বছর আগে সাঁকরাইল বাসুদেবপুরের ওষুধ ব্যবসায়ী সুমন হাজরার সঙ্গে পরিচয়ের পর তাঁর ভাগ্য বদলে যায়। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে পরিচয়ের পর বিপ্লব মা তারা ট্রেডার্স নামে একটি কোম্পানি খোলেন। সেই কোম্পানি আরজি কর হাসপাতাল-সহ কলকাতার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি এবং বিভিন্ন চিকিৎসার সামগ্রী সরবরাহ করতেন।

বিপ্লবের পরিচিত কৌশিক কোলের বাসুদেবপুর দাসপাড়ার বাড়িতেও এদিন যায় ইডি। সেখানে ইডি আধিকারিকরা কৌশিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কৌশিক ইনকাম ট্যাক্স, সেল ট্যাক্স-সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার আর্থিক হিসাবনিকাশের কাজ করতেন। তাঁরও গত কয়েক বছরে লক্ষ্মীলাভ নজর কেড়েছে পাড়ার লোকের। তাঁর সঙ্গে বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরার সম্পর্ক রয়েছে বলে খবর। এর সত্যতাই খতিয়ে দেখতে হানা দেয় ইডি।

এর পাশাপাশি ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ডেটা এন্ট্রি অপারেটার প্রসূন চট্টোপাধ্য়ায়ের বাড়িতে এদিন হানা দেয় ইডি। সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ স্বপন সাহার বাড়িতে হানা দিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি। অন্যদিকে ৭ নম্বর ক্য়ামাক স্ট্রিটেও এদিন হানা দেয় ইডি। এখানে এক মেডিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট সংক্রান্ত জিনিসের অফিস। সেখানেও সব নথি খতিয়ে দেখা হয় ইডি-র তরফ থেকে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =