বাংলাদেশ সীমান্ত পরিস্থিতি নজরদারির জন্য নয়া কমিটি গড়ল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

বাংলাদেশের অভ্যন্তরের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত ভারত। আর এর পাশাপাশি বিএসএফের জন্যও এসেছে বিশেষ নির্দেশ। কারণ, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উগ্র মৌলবাদ বাড়ছে। আর তা নিয়ে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে গোটা বিশ্বে। শুধু তাই নয়, পড়শি দেশের রাষ্ট্র নেতাদের একের পর এক সিদ্ধান্তে নানা প্রশ্নও তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় সীমান্তের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। আর এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে এবার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত পরিস্থিতি সর্বদা নজরদারির জন্য নয়া কমিটি গড়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে সীমান্ত নজরদারিতে তৈরি হল স্পেশাল মনিটরিং কমিটি। এই কমিটি সর্বদা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করবে এবং সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট করবে। এদিকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় এডিজি রবি গান্ধির নেতৃত্বে উচ্চপর্যয়ের বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকে সীমান্ত রক্ষার সঙ্গে যুক্ত সব ক’টি কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রের খবর, ভারত-বাংলাদেশ পরিস্থিতির উপরে সর্বদা নজরদারি রেখেছেন খোদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার বা ফেন্সিং নেই এমন জায়গাগুলোর উপরে সব থেকে বেশি নজরদারি বাড়াতে হবে।

এদিকে গত ১২ অগাস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৭২২ বার বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে বিশেষ সীমান্ত প্রহরার কাজ চলেছে ১৩৬৭ বার। বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্তারা বৈঠক করেছেন ৬১৪ বার। এদিকে পরিস্থিতি যে ক্রমশ খারাপ হচ্ছে সীমান্তে তা বৈঠকের ছত্রে ছত্রে উঠে আসে। বিশেষ করে ফেন্সিং না থাকা অংশগুলি সব থেকে চিন্তার কারণ বাহিনীর কাছে। কারণ, যেভাবে বাংলাদেশের জঙ্গি নেতারা একের পর এক মুক্তি পাচ্ছে, তাতে এদেশের সীমান্তবর্তী এবং কলকাতা ও বঙ্গের বিভিন্ন গ্রামগুলিতে জামাত শক্তির আবার উৎপাত বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা বিএসএফের। এই জঙ্গি শক্তিগুলির পিছনে পাকিস্তানের আইএস সব থেকে বেশি মদত থাকতে পারে বলে বৈঠকে আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সীমান্তে বিএসএফের উপরে আক্রমণ, অনুপ্রবেশের চেষ্টার সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া সহ একাধিক অপরাধ বাড়ছে বাংলাদেশের দিক থেকেও। সেই কারণেই সীমান্তের ওপরে আরও মজবুত নজরদারি প্রয়োজন রয়েছে বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। সেই কারণেই এই বিশেষ মনিটরিং কমিটি তৈরি করে দেওয়া হল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে। সূত্রের খবর, এই কমিটির রিপোর্ট সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নজরের আওতায় থাকবে বলেও জানা গিয়েছে।

ইতিমধ্যে, পড়শি দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পরেই কতজন ওপার থেকে এপারে অনুপ্রবেশে চেষ্টা করেছে, কতজন বিএসএফ জওয়ান অনুপ্রবেশকারীদের হাতে জখম হয়েছেন, কতজন বিএসএফের হাতে মারা পড়েছে, এই যাবতীয় তথ্য খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর লর্ড সিনহা রোড থেকে নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − 2 =