পঞ্চায়েত নির্বাচনের দু’দিন আগেই রাজ্যে শান্তির বার্তা দিতে রাজভবনের ‘পিস অ্যান্ড হারমনি কমিটি’। বুধবারের সন্ধেয় সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই কমিটি তৈরি করার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস স্বয়ং। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন এই বিচারপতি-ই হন এই কমিটির চেয়ারম্যান। তবে এই কমিটির কাজ কী হবে সে বিষয়ে অবশ্য কমিটির চেয়ারম্যান স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি রাজভবনের তরফ থেকে। এদিন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ ঘোষ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিকে এই কমিটির নিয়োগপত্র তুলে দেন। রাজভবনের পক্ষ থেকে এই কমিটির জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করা হয়। মূলত এই পিস অ্যান্ড হারমনি কমিটি রাজ্য শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে রাজ্যপালকে।
তবে কী কারণে এই পিস অ্যান্ড হারমনি কমিটি তা নিয়ে অবশ্য নির্দিষ্ট কিছু ভাবে বলতে চাননি রাজ্যপাল। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস খুব সংক্ষিপ্ত ভাবে এ প্রসঙ্গে জানান, ‘রাজ্যে শান্তিরক্ষার জন্য এই পিস কমিটি তৈরি করা হয়েছে।’ সাম্প্রতিক সময় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির অভিযোগ উঠে এসেছে। প্রাণহানির ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে।
এই সব ঘটনা সামনে আসার পরই মূলত পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজভবনে তৈরি করা হয় ‘পিস রুম’। এই পিস রুমে আসা অভিযোগ গুলিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে পাঠাচ্ছে রাজভবন। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোন অভিযোগ জানানো যাচ্ছে ইমেইল ও টেলিফোন মারফত এই পিস রুমে। শুধু তাই নয় ভ্রাম্যমান গাড়িতেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে পিস রুমে আসা অভিযোগ নিয়ে কথা বলতেও দেখা যায়। আর এবার পিস ও হারমনি কমিটি নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষত পঞ্চায়েত নির্বাচন যেখানে আর দুদিনও বাকি নেই সেই সময় দাঁড়িয়ে রাজভবনের এই পিস ও হারমনি কমিটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে কমিটির চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি শুভ্র কমল চক্রবর্তী জানান, ‘আমাদের সময় রাজনীতিটা ব্যবসার জায়গা ছিল না।’
সম্প্রতি রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একের পর এক অশান্তির অভিযোগ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল। শুধু তাই নয়, ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমাও দিয়েছিলেন রাজ্যপাল হিংসামুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে। যদিও সেই ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা শেষ হয় বুধবারই। অন্যদিকে মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল আলোচনার জন্য। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার আলোচনার জন্য যাননি বলেই রাজভবনের তরফে দাবি করা হয়েছে। আর এমনই প্রেক্ষিতে রাজভবনের পক্ষ থেকে এই নয়া কমিটি রাজনৈতিক উত্তাপ আরও যে তা নিয়ে প্রায় নিশ্চিত বঙ্গ রাজনৈতিক মহল।