আরজি কর কাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে, এমনই পাঁচ দফা দাবি তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে অনড় তাঁরা। মঙ্গলবার করুণাময়ী থেকে স্বাস্থ্য ভবন পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তাররা অভিযান করেন। বিকেল গড়িয়ে রাত হলেও স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে সরেননি তাঁরা। আর এই খবর পেয়ে রাতেই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে যান তিলোত্তমার বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। এদিন তিলোত্তমার কাকিমা মুখ্যমন্ত্রীকে বিদ্ধ করে বলেন, ‘ডাক্তারদের সুরক্ষা দিতে যাঁরা পারছেন না, তাঁরা কী করে কাজে ফেরার কথা বলেন?’ এরই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উৎসবে ফেরার মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগাস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে ‘তিলোত্তমা’-র দেহ উদ্ধার হয়। আন্দোলনে নামেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে বলে। কিন্তু, জুনিয়র চিকিৎসকরা স্পষ্ট করে দেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এদিকে যে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা তাতে রয়েছে আরজি কর কাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করা, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফা এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। এদিন স্বাস্থ্য সচিব আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের ইমেল পাঠিয়ে নবান্নে বৈঠকে আসার আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানানো হয়। আলোচনার পথ খোলা রাখলেও এদিন নবান্নে যাননি জুনিয়র ডাক্তাররা। এমনকী স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকেও সরে যাননি আন্দোলনকারীরা। রাতেও সেখানে চলে অবস্থান।
রাতেও স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র চিকিৎসকদের এই অবস্থান ভিন্ন মাত্রা পায়। গিটার বাজিয়ে চলে গানও। এই অবস্থায় জুনিয়র ডাক্তাররা রাতে কী খাবেন তা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা খোঁজ নিলেও কোনওরকম সাহায্য নিতে অস্বীকার করে কার্যত সাহায্য প্রত্যাখ্যানই করতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।
এদিকে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সম্পূর্ণ দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি বলে জানান আন্দোলনকারীরা। আর সেই কারণেই তাঁদের এই আন্দোলন জারি থাকবে বলে স্পষ্ট জানালেন স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তাররা।