ডাক্তারদের গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের এই দাবি ভুল, জানালেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

আরজি কর-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে যে মামলা গ্রহণ করা হয় তাতে মূলত তরুণী চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের মামলা হলেও শুনানিতে সামনে আসে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ। এদিকে আরজি কর মামলায় সওয়াল করছেন ২০০-র বেশি আইনজীবী। রাজ্য সরকার, সিবিআই, তিলোত্তমার পরিবার, জুনিয়র ডাক্তার সহ একাধিক পক্ষ রয়েছে সেই মামলায়। শুনানি হওয়ার পরই শিরোনামে আসেন আইনজীবী করুণা নন্দী। প্রতিটি শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের চিকিৎসকদের হয়ে সওয়াল করতে দেখা যায় তাঁকে। জানা যায়, বাংলার বাসিন্দা না হলেও করুণা বাঙালি। বাংলায় কথাও বলতে পারেন। তাই রাজ্যের মানুষ তথা বাঙালির মধ্যে জনপ্রিয়তা বেড়েছে করুণা নন্দীর।

এই মামলায় রাজ্যের তরফে শীর্ষ আদালতে তরফে দাবি করা হয়, চিকিৎসকদের গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জন রোগীর। সেই দাবি যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, সে কথাই বললেন ওই মামলার অন্যতম আইনজীবী করুণা নন্দী। প্রসঙ্গত, আরজি কর মামলায় সিনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষে লড়ছেন সিনিয়র আইনজীবী করুণা নন্দী।

আইনজীবী করুণা নন্দী এই প্রসঙ্গে জানান, মুখ্যমন্ত্রী ও পদস্থ তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসকদের অবহেলায়। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগ তুলে মৃতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও যে সঠিক নয় সে কথাও জানান করুণা নন্দী।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর বক্তব্য, ক্ষতিপূরণ দিয়ে রাজ্য আদতে চিকিৎসকদের সমস্যায় ফেলেছেন। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আগামী সোমবার আরজি কর মামলার পরবর্তী শুনানিতে এই বিষয়টি তিনি তুলে ধরবেন বলেও উল্লেখ করেন। আইনজীবীর বক্তব্য, আরজি করে যা হয়েছে, সেই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে রাজ্যের সার্বিক পরিকাঠামোয় পরিবর্তন আনা জরুরি। তার জন্য রাজ্য সরকারের ওপর যে চাপ তৈরি করা হয়েছে, সেটা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবী করুণা নন্দী এও জানান, এই মামলাটা তাঁর কাছে অত্যন্ত ‘পার্সোনাল’। কারণ তিনি নিজে একজন বাঙালি। তিনি মনে করেন, বাঙালি মেয়েদের রক্তে আছে স্বাধীনতা। আর এই আরজি করের ঘটনায় সেই স্বাধীনতা ধাক্কা খেয়েছে। রাজ্যের দায়িত্ব সেটা প্রত্যেক মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়া।

এরই পাশাপাশি সিনিয়র এই মহিলা আইনজীবী এও জানান, বাঙালির অনেক ভাল জিনিস আছে। নারীবাদের ক্ষেত্রে বাংলা অনেক এগিয়ে। তাই সমাজ বদলাতে বাংলাকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। গোড়া থেকে বদল না এলে কোনও সরকারই এই বদল আনতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − ten =