জুনিয়র ডাক্তারদের এবার কাজে যোগ দেওয়ার পরামর্শ জহর সরকারের

এবার জহর সরকারের গলায় ভিন্ন সুর। জুনিয়র ডাক্তারদের তিনি এবার কাজে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিলেন। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন জহর। এমনকি মঙ্গলবার প্রতিবাদীদের মিছিলেও হেঁটেওছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরই তিনি ভিন্ন সুরে কথা বললেন। নিজের ইস্তফার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের এবার কাজে ফেরার আহ্বান জানালেন প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন এই আমলা। জহর বলেন, কর্মবিরতি জারি রেখে মানুষের কষ্ট বাড়াবেন না।

আরজি করের নির্যাতিতার বিচার এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত দাবিতে জহর যে আন্দোলনকারীদের পাশে রয়েছেন, তা বোঝাতে তিনি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্টও করেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতি জহর লেখেন, ‘প্রিয় ডাক্তাররা, আপনাদের আন্দোলনের সঙ্গে আমিও আছি। তাই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। তবে, এবার কাজে ফিরুন, এভাবে মানুষের কষ্ট বাড়াবেন না!’

এদিকে, রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা-পরিস্থিতি। এর উপরে পুজোর মরসুম চলছে, পুজো শুরু হল বলে। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে গরিব এবং প্রান্তিক মানুষগুলি চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। নিজের পোস্টে সেটাই স্পষ্ট করেন জহর সরকার।

প্রসঙ্গত, রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়েছেন তিনি। তার কারণ ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও দিয়েছিলেন জহর সরকার। সেই চিঠিতে তিনি তাঁর ক্ষোভের বিভিন্ন কারণ দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন, কতিপয় আমলা ও নেতাব্যক্তির ব্যবহার যে ক্রমশ মানুষের পক্ষে সহ্য করা কঠিন হচ্ছে। সঙ্গে এও লিখেছিলেন, ‘আমি গত একমাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি আপনি কেন সেই পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না!’

পরে অবশ্য সবাইকে অবাক করে দিয়ে ঘটনার দিন বেলা দেড়টা নাগাদ হঠাৎই সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনের কাছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধেবেলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কালীঘাটে বহু ঈপ্সিত বৈঠকটি ডাকেন। সেখানে পৌঁছে মমতা গভীর আবেগের সঙ্গে বললেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আসিনি, আমি দিদি হিসেবে এসেছি। আমি যখন এসেছি কাজ করবই। এই আন্দোলনে রোদে-বৃষ্টিতে আপনাদের খুব কষ্ট হয়েছে। আমিও আপনাদের জন্য কষ্ট পেয়েছি। আপনাদের দাবিগুলি সহানুভূতির সঙ্গে ভাবব। আমাকে একটু সময় দিন। যারা দোষ করেছে তারা শাস্তি পাবে। আপনারা কাজে যোগদান করুন। সিবিআইকে বলব দ্রুত তদন্ত শেষ করব। কোনও ডাক্তারেরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়। আমি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলব। আমার এটা শেষ চেষ্টা।’ এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও করেছিলেন জহর সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 1 =